চরম বিপন্ন প্রজাতি এশিয়াটিক চিতা বাঘের তিনটি শাবকের বেঁচে থাকা শেষ শাবকটিও চলে গেল। কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার পর ইরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে; সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার না ফেরার দেশে চলে গেছে চিতা শাবকটি।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আইআরএনএ বলেছে, গত বৃহস্পতিবার কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ায় সেন্ট্রাল ভেটেরিনারি হাসপাতালে ভর্তি করা চিতা শাবক ‘পিরৌজ’ ডায়ালাইসিসের পর মারা গেছে।
হাসপাতালের পরিচালক ওমিদ মোরাদি আইআরএনএকে বলেছেন, পিরৌজের চলে যাওয়া এবং প্রাণীটিকে বাঁচানোর জন্য চিকিৎসা সেবা দলের গত কয়েকদিনের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায়, তা আমাকে এবং আমার সব সহকর্মীকে দুঃখ ভারাক্রান্ত করে তুলেছে। আমরা সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, এই প্রাণীটিকে বাঁচিয়ে রাখতে পারিনি।
পিরৌজ ফার্সি শব্দ, যার অর্থ ‘বিজয়ী’। গত বছরের মে মাসে উত্তর-পূর্ব ইরানের এক বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রমে জন্মের পর থেকে দেশটিতে জাতীয় গর্বের উৎস হয়ে উঠেছিল পিরৌজ। একই মাসে তার সাথে জন্ম নেওয়া অপর দু’টি বিরল প্রজাতির এশিয়াটিক চিতা শাবক মারা যায়। কিন্তু বেঁচে যায় পিরৌজ।
এশিয়াটিক চিতা এক সময় আরব উপদ্বীপ থেকে শুরু করে আফগানিস্তান পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় বাস করতো। কিন্তু এখন শুধুমাত্র ইরানে কিছু এই চিতা টিকে আছে বলে মনে করা হয়। ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা ২০২২ সালে বলেছিলেন, দেশটিতে মাত্র ১২টি এশিয়াটিক চিতা বেঁচে আছে বলে তাদের ধারণা।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) ২০১৭ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বে বিপন্ন এই প্রজাতির চিতা কেবল ইরানেই রয়েছে। মাটিতে বাস করা বিশ্বের দ্রুতগতির এই প্রাণী ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে।
২০০১ সালে জাতিসংঘের সহায়তায় চিতা সুরক্ষা কর্মসূচি চালু করে ইরান। গত বছরের জানুয়ারিতে ইরানের উপ-পরিবেশ মন্ত্রী হাসান আকবরী বলেছিলেন, ইরানে মাত্র এক ডজন এশিয়াটিক চিতার আবাস রয়েছে। ২০১০ সালেও দেশটিতে এই চিতার সংখ্যা ছিল ১০০টির কাছাকাছি।
খাঁচায় বন্দি অবস্থায় শাবকের জন্ম এশিয়াটিক চিতার সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করবে বলে আশাপ্রকাশ করেছিল ইরানের পরিবেশ বিভাগ।