1221

09/20/2024 লকডাউনে যুবকের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, পুলিশের তিন সদস্যকে শোকজ

লকডাউনে যুবকের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, পুলিশের তিন সদস্যকে শোকজ

জেলা সংবাদদাতা, ফেনী

২০ এপ্রিল ২০২১ ১৮:৩৮

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডের মডেল হাই স্কুলের সামনে পুলিশের সঙ্গে শহিদুল ইসলাম নামে এক যুবকের বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি এবং হাতকড়া পরানোর ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে শোকজ করেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাতে ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) যশমন্ত মজুমদার ও দুই কনস্টেবলকে শোকজ করা হয়।

পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী স্বাক্ষরিত এক আদেশে এসআই যশোমন্ত মজুমদারকে ফেনী মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাদের ঘটনার কারণ দর্শাতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

গত রোববারের ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, রিকশা থামিয়ে মাস্কবিহীন এক যুবকের সঙ্গে বাগ-বিতণ্ডার একপর্যায়ে তাকে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।

ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম মাস্কবিহীন রিক্সাযোগে উকিলপাড়া থেকে ট্রাংক রোডের দিকে যাচ্ছিলেন। মডেল স্কুলের সামনে মডেল থানার দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) যশোমন্ত মজুমদারসহ পুলিশ সদস্যরা তার রিক্সা গতিরোধ করে। এ সময় ওই যুবক বলতে থাকেন- ‘অন্য রিক্সা ছেড়ে দিছস! আমার রিক্সা কেন ধরা হয়েছে?’ একপর্যায়ে তাকে রিক্সা থেকে জোরপূর্বক নামানোর পর ওই যুবক গালমন্দ করতে থাকে। পুলিশ তাকে ‘পাগল’ আখ্যা দিলে কেন পাগল বলা হয় তার কারণ জানতে চান ওই যুবক। তার হাতে হাতকড়া লাগানোর চেষ্টা করলে চার পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।

তখন ওই যুবক বারবার বলতে থাকে- ‘এ দেশ পুলিশের দেশ। এই দেশে পুলিশের অনেক ক্ষমতা, না!’ হাতকড়া লাগাতে না পেরে এক পুলিশ সদস্য তাকে পিছমোড়া করে চেপে ধরলে রাস্তার আশপাশে থাকা লোকজন উচ্চস্বরে হইচই করতে থাকে। হাতকড়া লাগানোর পর ওই যুবক পুলিশকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে।

হাতাহাতির একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় একাধিক পুলিশ সদস্য তাকে যাপটে ধরে এবং হ্যান্ডকাফ পরানোর চেষ্টা করেন। ৪/৫ জন পুলিশ সদস্য তাকে হ্যান্ডকাফ পরানোর জন্য জোরপূর্বক মাটিতে ফেলে চাপ প্রয়োগ করেন। এক পুলিশ সদস্য চিৎকার করে বলতে থাকেন, হ্যান্ডকাফ লাগা, ধর। এ সময় উপস্থিত জনতার তোপের মুখে তারা আবার ওই ব্যক্তিকে ধরে উঠান এবং হ্যান্ডকাফ পরান।

ঘটনাস্থলে উচ্ছুক জনতার ভিড় জমতে শুরু করলে শহিদুল ইসলাম সবার উদ্দেশে বলেন, মসজিদে কোরআন পড়তে যাচ্ছিলাম, বলছি আমাকে ছেড়ে দেন। এ সময় ওই হ্যান্ডকাফ পরতে অস্বীকৃতি জানান এবং গালাগালিসহ এলোপাথাড়ি হাত-পা ছুড়তে থাকেন। একই সময় তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে চিৎকার করে ভিডিও করতে বলেন।

পরে একপর্যায়ে যুবক শহিদুল ইসলাম এটা আওয়ামী লীগের দেশ বলে চিৎকার করতে থাকেন। পরে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) ওমর হায়দার জানান, থানায় নেওয়ার পর জানা গেছে ওই যুবক কিছুদিন পরপর ভাইরাল হতে চায়। ভবিষ্যতে এমন কাজ করবে না মর্মে মুচলেকা দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী বলেন, লোকটি মানসিক ভারসাম্যহীন। পুলিশ কর্তব্য পালনকালে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পুলিশের উপর ক্ষেপে যায় এবং মারতে আসে। তখন পুলিশ আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে। তার গায়ে হাত তোলা পুলিশের উদ্দেশ্য নয়। ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) যশমন্ত মজুমদারসহ ঘটনার সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ঘটনার কারণ দর্শাতে মঙ্গলবার তাদের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। তাদের বক্তব্য শোনার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]