12379

04/22/2025 ইউক্রেনের ২৪ শতাংশ মানুষ এখন গরিব

ইউক্রেনের ২৪ শতাংশ মানুষ এখন গরিব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১ মে ২০২৩ ০১:১২

বিনামূল্যে রুটি বিতরণ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক স্বেচ্ছাসেবক। তাকে নিজের সামরিক মেডেল দেখাচ্ছেন ইউক্রেনের এক সাবেক সেনা কর্মকর্তা।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে কথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালানোর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার নির্দেশের পর ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক ধ্বংসজজ্ঞ চালায় রুশ সেনারা। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে সাধারণ ইউক্রেনীয়দের মধ্যে।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান রোববার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনে বেকার ও গরিবের সংখ্যা বেড়েছে। এক বছর আগেও ইউক্রেনের পুরো জনসংখ্যার মাত্র ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এটি ২৪ দশমিক ২ শতাংশে গিয়ে পৌঁছেছে। এই অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় ৭১ লাখ মানুষ আর্থিক স্বচ্ছলতা হারিয়েছেন।

যুদ্ধের কারণে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় চাকরিও হারিয়েছেন অনেকে। বর্তমানে দেশটির ৩৬ শতাংশ কর্মক্ষম মানুষই কোনো কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এছাড়া ২০২২ সালের শেষদিকে দেশটিতে মূলস্ফীতি ২২ শতাংশ পর্যন্ত ওঠে।

বিশ্বব্যাংকের পূর্ব ইউরোপের আঞ্চলিক পরিচালক অরূপ ব্যানার্জি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অবস্থা এরকম চলতে থাকলে দারিদ্রতা ও বেকারত্বের সংখ্যা আরও বাড়বে।

এছাড়া প্রয়োজন মেটাতে এখন অনেক সাধারণ ইউক্রেনীয় তাদের দামি জিনিসপত্র বন্ধক রেখে অর্থ নিচ্ছেন। যার মধ্যে তাদের মোবাইল ফোনও রয়েছে। এছাড়া রুটির দোকানে সাধারণ মানুষের ভীড় বাড়ছে।

রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত একটি বন্ধক দোকানে আসা এক নারীর সঙ্গে কথা হয় গার্ডিয়ানের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নারী জানান, তিনি তার সেলাই মেশিনটি এই দোকানে বন্ধক দিয়ে অর্থ নিয়েছিলেন। এখন এটি ছাড়িয়ে নিতে এসেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, রুশ সেনারা হামলা চালানোর আগে ছোট একটি ফার্মের হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন। কিন্তু যুদ্ধ বাধার পর এটি বন্ধ হয়ে যায়। তারা ফার্মটিতে মোট ১৪ জন কাজ করতেন। ওই সময় তারা সবাই একসঙ্গে চাকরি হারান। এতে হঠাৎ করে অর্থ সংকটে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন আরেকটি ছোট চাকরি পাওয়ার পর নিজের সেলাই মেশিনটি ফেরত নেওয়ার অর্থ যোগাড় করতে সমর্থ হয়েছেন।

ওই বন্ধক দোকানের কর্মচারী ওলেক্সান্ডার স্টেফানোভ জানিয়েছেন, ব্যস্ততার দিনে তাদের দোকানে ৫০ জন মানুষও আসতে পারেন। যারা দামি জিনিসপত্র বন্ধক দিয়ে যান। যারা পারেন তারা ২ সপ্তাহের মধ্যে সেগুলো নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই আর আসেন না। ফলে সেগুলো বিক্রি করার জন্য সাজিয়ে দেন তারা।

এছাড়া বিনামুল্যের পণ্য ও রুটি নিতেও অনেক মানুষ লাইন ধরছেন। যারমধ্যে সাবেক সামরিক কর্মকর্তাও রয়েছেন। যারা আগে সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করলেও বর্তমানে কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছেন।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]