ইউক্রেনের খারকিভের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত হরোজা গ্রামে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে আট বছর বয়সী এক শিশুসহ অন্তত ৫১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এই হামলাকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে ‘রক্তক্ষয়ী অপরাধের’ একটি বলে আখ্যায়িত করেছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপরে পূর্ব ইউক্রেনের হরোজা গ্রামে ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানার সময় সেখানে গ্রামবাসীরা একটি শোকসভায় জড়ো হয়েছিলেন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ওই এলাকায় কোনো সামরিক লক্ষ্যবস্তু নেই, শুধুমাত্র বেসামরিক লোকজন ছিল।
খারকিভের আঞ্চলিক প্রধান তদন্তকারী সের্গেই বলভিনভ বলেছেন, ‘সব লোকই স্থানীয় বাসিন্দা, সব মানুষই বেসামরিক। একটিও সামরিক নয়, একটি সামরিক বস্তু নয়, একটি সামরিক যানও নয়। নিহত ও আহত সকলেই বেসামরিক নাগরিক।’
হামলার সময় গ্রামটির বাসিন্দারা একটি শোকসভায় সমবেত হয়েছিলেন। ছবি: সিএনএন
হামলার পর ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাহোর ক্লাইমেনকো বলেছেন, ওই শোকসভায় প্রতিটি পরিবার থেকে লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এটি একটি ‘ভয়ানক ট্র্যাজেডি।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক ভাষণে ভয়াবহ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, যে গ্রামে প্রায় ৩০০ জন বাসিন্দা বাস করত এবং তাদের মধ্যে ৫০ জনেরও বেশি রাশিয়ান হামলায় নিহত হয়েছেন- প্রতি ছয়জন বাসিন্দার একজন, সেই গ্রামে বর্বর এ হামলা চালানো হয়েছে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘এমন অশুভকে থামাতে পারে- এমন কোনো শব্দ বা নথি নেই। কিন্তু বিমান প্রতিরক্ষা আছে। কামান আছে। আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র আছে। আমাদের সাঁজোয়া যান রয়েছে। আমাদের শক্তিশালী সেনারা আছে, যারা রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করে।
ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ান সন্ত্রাস অবশ্যই ব্যর্থ হবে এবং এটি নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের যা যা প্রয়োজন তা আছে। মূল জিনিসটি হলো ঐক্য। প্রধান জিনিস হল স্বাধীনতায় বিশ্বাস করা এবং জীবন রক্ষা করা।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কুপিয়ানস্ক জেলার অংশ হিসেবে খারকিভের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত হরোজা গ্রামটি ফ্রন্ট লাইনে ছিল। শুরুতে অঞ্চলটি রুশ বাহিনীর জন্য প্রধান সরবরাহ কেন্দ্র ছিল। তবে সংঘাত শুরুর কয়েক মাস পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এটি পুনরুদ্ধার করে ইউক্রেনে সামরিক বাহিনী।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, সিএনএন, বিবিসি।