16269

04/23/2025 গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের ফল উল্টো হতে পারে: ওবামা

গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের ফল উল্টো হতে পারে: ওবামা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ অক্টোবর ২০২৩ ১১:২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আবাসিক ভবন, হাসপাতাল, স্কুলসহ সাধারণ মানুষের ওপর বোমা ফেলছে তেল আবিব। এমন অবস্থার মধ্যেও ইসরায়েলের পাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে হাজির হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরু দুই সপ্তাহের বেশি সময় পর এ নিয়ে মুখ খুলেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

সোমবার মতামত প্রকাশের উন্মুক্ত মাধ্যম মিডিয়াম-এ ওবামার বিবৃতিটি প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। তার বিবৃতির সঙ্গে অনেকটাই জো বাইডেন প্রশাসনের অবস্থান মিলে যায়। তারপরও তিনি কিছু বিষয়ে ইসরায়েল ও মার্কিন প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়েছেন।

ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকারের’ প্রতি সমর্থন জানিয়েছ ওবামা বলেন, ‘এমনকি আমরা যদি ইসরায়েলকে সমর্থনও করি, এরপরও হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল এই লড়াই কীভাবে সম্পন্ন করবে, সে ব্যাপারে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। এই সংঘাতকে চলতে দেওয়ার মানে ফিলিস্তিনিদের দুর্দশাকে উপেক্ষা করা। গাজা হোক বা পশ্চিম তীর, সেটা অন্যায্য।’

গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এই অঞ্চলের ঘটনাপ্রবাহের দিকে বিশ্ব নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। মানবিক ক্ষয়ক্ষতি উপেক্ষা করে, এমন যেকোনো ইসরায়েলি সামরিক কৌশল শেষ পর্যন্ত হিতে বিপরীত হতে পারে।’

নাইন-ইলেভেনের হামলার প্রসঙ্গ টেনে ওয়াশিংটনের মতো একই ধরনের ভুল না করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান ওবামা। ওই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাধিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল।

ওবামা বলেন, ‘যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্র নিজেও মাঝেমধ্যে আমাদের সমুন্নত মূল্যবোধ থেকে ছিটকে পড়েছে। নাইন-ইলেভেনের পর আল-কায়েদার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে নেওয়া পদক্ষেপের সময় যুক্তরাষ্ট্র এমনকি আমাদের মিত্রদের উপদেশও কানে তুলতে আগ্রহী ছিল না।’

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কিছু মূল কারণও তুলে ধরেন ওবামা। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের গোড়াপত্তনের পর থেকে ফিলিস্তিনিদের অব্যাহতভাবে বাস্তুচ্যুত হওয়া। বারাক ওবামা বলেন, এর মানে স্বীকার করে নেওয়া যে ফিলিস্তিনিরাও প্রজন্মের পর প্রজন্ম বিতর্কিত এলাকায় বসবাস করে আসছে। ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের সময় তাদের অনেকে কেবল বাস্তুচ্যুতই হয়নি, দিনের পর দিন জোরপূর্বক তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এমন কর্মকাণ্ডেও ইসরায়েল সরকারের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সমর্থন ছিল।

ইসরায়েল ২০১৪ সালে যখন অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযান চালায়, তখন ওবামা নিজেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই সময় তিনি একইভাবে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডে সমর্থন দিয়েছিলেন। অবশ্য একই সঙ্গে যুদ্ধবিরতিরও আহ্বান জানিয়েছিলেন। ওই সময় ওবামাকে পাশ কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রভান্ডার থেকে ইসরায়েল অস্ত্র নিতে গেলে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দেয়।

গাজায় ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধের সমালোচনা করেছেন ওবামা। তিনি বলেন, ‘বেসামরিক জনসংখ্যার (গাজায়) খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বন্ধ করার ইসরায়েলি সরকারের সিদ্ধান্ত শুধু মানবিক সংকট বাড়াবে না, এর পাশপাশি এটি ইসরায়েলের প্রতি ফিলিস্তিনিদের মনোভাবকে আরও কঠোর করতে পারে।’

ওবামা বলেন, ‘এমন কর্মকাণ্ড ইসরায়েলের প্রতি বিশ্বব্যাপী সমর্থন হ্রাস করতে পারে। এটি এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন করে।’

সূত্র: রয়টার্স

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]