মহামারি করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গণপরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কাগজে-কলমে বন্ধ রয়েছে নৌপথও। তারপরও ঘরমুখো মানুষের স্রোত প্রতিদিনই বাড়ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যাচ্ছে মানুষ।
মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েনের পরও রোববার (০৯ মে) সকাল থেকেই বাড়িফেরা মানুষদের ঢল নেমেছে। কোথাও কোনো স্বাস্থ্যবিধি নেই।
ফেরি বন্ধ থাকায় নানাভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পার হচ্ছে মানুষ। অনেকেই মাছ ধরা ট্রলারেই পাড়ি দিচ্ছেন খরস্রোতা পদ্মা। ফলে যেকোনো মুহূর্তেই বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকছে।
রোববার সকাল থেকেই শিমুলিয়া ঘাটে হাজার হাজার যাত্রীকে অপেক্ষমাণ দেখা গেছে। যাত্রীরা আশায় আছেন গতকালের মত যদি দুএকটা যাত্রীবাহী ফেরি ছেড়ে যায়!
তবে ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছেন, গত পরশু রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণার পরও অনেক যাত্রী গতকাল ভুলে চলে এসেছিলেন। এজন্য মানবিক কারণে কয়েকটি যাত্রীবাহী ফেরি ছাড়া হয়েছে। আজ সেই সুযোগ নেই।
বিআইডব্লিউটএ বলছে, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দিনেরবেলা ফেরিতে যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র রাতে জরুরি পণ্য ও অ্যাম্বুলেন্স পারাপার করবে ফেরিগুলো। তবে বিধিনিষেধ ধাকার পরও ট্রলারে করে অনেকেই রওনা দিচ্ছেন।এদিকে উত্তরবঙ্গে প্রবেশের রাস্তাগুলোতেও দিন দিন ঘরমুখো মানুষের স্রোত বাড়ছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে নানা পন্থায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়ায় বাড়ি ফিরছেন মানুষ। খোলা ট্রাক, পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ, মোটরসাইকেলসহ ব্যক্তিগত ছোট ছোট যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন তারা।
রংপুরগামী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আরাফাত জানান, বাবা-মাকে রেখে ঈদ করা যায় নাকি? কয়েকজন বন্ধু মিলে একটা নোহা গাড়ি ভাড়া নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। তবে গাড়িভাড়া স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অনেক যাত্রী বলেন, খানিক কষ্ট হয় হোক পরিবারের সঙ্গেই ঈদ করব। তাদের অভিযোগ, আন্তঃজেলা পরিবহন বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও ঝুঁকি দুটোই বাড়ছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, মহাসড়কের ৫৪টি জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আমরা দিনরাত পরিশ্রম করছি। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে মহাসড়কে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।