সৌদি আরবের মদিনায় অবস্থিত ওয়াদি আল বাইদা বা ওয়াদি আল জিন। পাহাড়টি সৌদি নাগরিকদের কাছে এই নামেই পরিচিত। তবে বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে এটি জিন পাহাড় নামে পরিচিত। পাহাড়টি ঘিরে অনেকে অলৌকিক বা রহস্যময় কিছু খোঁজেন। কেউ আবার চুম্বকের আকর্ষণের কারণে এমনটি ঘটছে বলে মনে করেন। এই পাহাড় নিয়ে বেশ কয়েকবার গবেষণা হয়েছে, তবে নিশ্চিত কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি।
কথিত ওয়াদি আল জিনের অবস্থান মদিনা শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। মদিনা থেকে বের হয়ে কিছু খেজুর বাগান পার হয়ে যেতে হয় এলাকাটিতে। খেজুর বাগানের পর পাহাড়ি পথ। এই এলাকার পাহাড়গুলোও ব্যতিক্রম। ন্যাড়া পাহাড়, পাহাড়ের ওপর ধারালো সূচের ন্যায় ফলা ফলা মাটি দাঁড়িয়ে আছে।
পাহাড়টির রহস্যময় দিক হলো, এখানে ড্রাইভারের স্পর্শ ছাড়াই গাড়ি নিজে নিজে এগিয়ে চলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গতি বেড়ে যায়। ড্রাইভারকে শুধু স্টিয়ারিং করে রাখতে হয়।
সৌদি আরবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইসলামের ইতিহাস-ঐহিত্যের স্মৃতিচিহ্ন। দেশটিতে এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ইসলামের অসংখ্য নির্দশন। রাসূল সা.-এর হাদিস বর্ণনা, ওহী নাজিলের স্থানগুলো এখনো সৌদি আরবে অবস্থিত। স্বভাবতই রহস্যঘেরা পাহাড়টির সঙ্গে ধর্মীয় কোনো আবহ খোঁজার চেষ্টা করেন অনেকে। তবে পাহাড়টি নিয়ে কোরআন হাদিসে সরাসরি কিছু বর্ণিত হয়নি। ইসলামী চিন্তাবিদেরাও বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কোনো মন্তব্য করেননি।
কেউ কেউ ধারণা করেন, রাসূল সা.-এর কাছে জিনেরা এই পাহাড়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তবে বিষয়টি ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত নয়। বরং রাসূল সা. তায়েফ থেকে ফেরার পথে মক্কায় একটি পাহাড়ের কাছে জিনদের সঙ্গে রাসূল সা.-এর সাক্ষাতের বিষয়টি প্রমাণিত।
বর্তমানে এই অঞ্চলটি সৌদি আরবের অন্যতম পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকেরা এখানে ভ্রমণে আছেন। হজ, ওমরাপালনকারীরাও পাহাড়টি ঘুরে দেখেন। সৌদি নাগরিকেরা ছুটির দিনগুলো এখানে মরুভূমিতে তাবু টানিয়ে অবকাশ যাপন করেন।
পাহাড়টিতে রহস্যময় কিছু অবস্থিত নাকি এই অঞ্চলে অতিরিক্ত চম্বুকের আকর্ষণের কারণে এমন হয়ে থাকে তা অমীমাংসিত। তবে সৃষ্টির অপার রহস্যের নির্দশন বহন করছে এই পাহাড়।