ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের হালদওয়ানি জেলায় একসঙ্গে ১৭০টি মাদ্রাসা বন্ধের ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং উদ্বেগ জানিয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ আলেমদের সংগঠন সাধারণ আলেম সমাজ।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বার্তায় এসব ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদিতা ও ধর্মীয় বিদ্বেষের স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেছেন আলেমরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাধারণ আলেম সমাজ মনে করে এই সিদ্ধান্ত ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার মুখে চপেটাঘাত এবং সেখানে মুসলিম শিক্ষাব্যবস্থাকে পেছনে ঠেলে দেওয়ার পরিকল্পিত পদক্ষেপ। এটি শুধুই শিক্ষার ওপর আঘাতই নয়, বরং একটি ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে সাংস্কৃতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করার রাষ্ট্রীয় প্রয়াস।
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহারণ টেনে আলেমরা জানান, এখানে (বাংলাদেশে) আমরা এটি কল্পনাই করতে পারি না। যদি বাংলাদেশে একসঙ্গে ১৭০টি মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হতো এবং শীর্ষপর্যায়ের কেউ সেটিকে ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যায়িত করতেন, তাহলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা, এনজিও এবং দেশীয় সুশীল সমাজে কী রকম তোলপাড় হতো, তা সহজেই অনুমান করা যায়।
অথচ ভারতে দিনের পর দিন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলিম নিপীড়ন, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং উপাসনলায় বন্ধ, গরু, নামাজ, হিজাব এবং মুসলিমদের ওয়াকফকৃত সম্পদে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুসলমানদের নাগরিক অধিকার খর্ব করে একের পর এক আইন পাস করা হচ্ছে। এর কোনো জবাবদিহিতা নেই। আশ্চর্যজনকভাবে কিছু বাংলাদেশি সুশীল ব্যক্তিত্ব, এনজিও সংশ্লিষ্ট এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও পতিত শক্তির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রকেও ‘কমিউনাল ভায়োলেন্স’ বলে প্রচার করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি নষ্টে লিপ্ত হন।
সাধারণ আলেম সমাজ মনে করে, এটি শুধু দ্বৈতনীতি নয়; বরং মুসলিম জাতিসত্তার বিরুদ্ধেই একটি বিশ্বব্যাপী ন্যারেটিভ যুদ্ধ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমরা মুসলিম বিশ্বের বিবেকবান মানুষ, আলেম, চিন্তাবিদ ও সংগঠনসমূহকে এই সাম্প্রদায়িক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।