ভারত-শাসিত জম্মু-কাশ্মিরে হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। উপত্যকাটির পেহেলগামে হামলার এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র সফর সংক্ষিপ্ত করেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
এছাড়া কাশ্মির ছাড়ার চেষ্টা করছেন পর্যটকরা। অন্যদিকে হামলার ঘটনায় কাশ্মির জুড়ে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পেহেলগামে হামলার পর অনেক পর্যটকই এখন কাশ্মির ছাড়ার চেষ্টা করছেন। শ্রীনগর বিমানবন্দরের ট্যুর অপারেটররা জানিয়েছেন, পেহেলগাম হামলার পর দেশি পর্যটকরা কাশ্মির ছাড়ার জন্য তাড়াহুড়ো করছেন। অনেক গাড়ি এখন বিমানবন্দরের দিকে আসছে।
তবে বিবিসি সংবাদদাতা ইয়োগিতা লিমায়ি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন, তিনি মুম্বাই থেকে আসার সময় ফ্লাইটে অনেক দেশি পর্যটকদের দেখেছেন, যারা তাদের কাশ্মিরে ঘোরার পরিকল্পনা বাতিল করেননি।
অন্যদিকে, দিল্লি থেকে কাশ্মিরে যাওয়া বিবিসির অন্য সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, তাদের ফ্লাইট বেশ ফাঁকা ছিল।
এদিকে মঙ্গলবার কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে কাশ্মির জুড়ে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ওই অঞ্চলের গণপরিবহন ব্যবস্থায়ও।
বিবিসি বলছে, পেহেলগামের ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। জানা গেছে, দেশটির ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) একটি দল ইতোমধ্যেই শ্রীনগরে পৌঁছেছে এবং আরও কয়েকটি টিমের সেখানে যাওয়ার কথা রয়েছে।
পাশাপাশি, দেশটির শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও পেহেলগাম পরিদর্শনে যাবেন।
এদিকে কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “এই শোক প্রকাশ করার মতো কোনও শব্দ নেই।”
যুক্তরাষ্ট্র এবং পেরুতে ১১ দিনের সফরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্ব ব্যাংক এবং জি২০-ভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের সাথে বৈঠকে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল।
কিন্তু তার ওই সফর সংক্ষিপ্ত করে তিনি শিগগিরই ভারতে ফিরবেন বলে জানা গেছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তার সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে বুধবার সকালে ভারতে ফিরে আসেন।
এদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা বারামুল্লা জেলায় “সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের”দের একটি হামলা ঠেকিয়ে দিয়েছে। সেই সময় সেনাবাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে দুইজন “সন্ত্রাসী” নিহত হয়েছে বলে তারা দাবি করেছে।
মঙ্গলবার যেখানে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনা ঘটে, সেই পেহেলগাম থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে বারমুল্লা অবস্থিত।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, লাইন অব কন্ট্রোল বা সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছাকাছি ওই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এই নিয়ন্ত্রণে রেখা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মিরকে বিভক্ত করেছে।
সেখান থেকে “বিপুল অস্ত্র, গোলাবারুদ” উদ্ধার করা হয়েছে বলেও ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে।