হজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান ও ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। হজরত ইবরাহিম কাবা ঘর নির্মাণের পর আল্লাহ তায়ালা তাকে হজের ঘোষণা দিতে বলেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে—
‘আর তুমি মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা জারি করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং (দীর্ঘ সফরের কারণে) সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে। যাতে তারা তাদের কল্যাণের স্থান পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং (কোরবানির) নির্দিষ্ট দিনগুলিতে (১০, ১১, ১২ জিলহজ) তার দেওয়া চতুষ্পদ পশু সমূহ যবেহ করার সময় তাদের উপরে আল্লাহর নাম স্মরণ করে। অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং আহার করাও অভাবি ও দুস্থদেরকে। (সূরা হজ, আয়াত : ২৭-২৮)।
আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে হজরত ইবরাহিম আ. মাকামে ইবরাহিমে দাঁড়িয়ে উচ্চ কণ্ঠে চারদিকে ফিরে হজের ঘোষণা দেন। আল্লাহ তায়ালা তার এই ঘোষণা পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে পৌঁছিয়ে দেন। উম্মতে মুহাম্মাদীর ওপর হজ ফরজ করা হয়েছে।
ইসলামের বিধান পালনে এবং আল্লাহর প্রেমে প্রতি বছর হজ করতে যান বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিম। হজ করতে যাওয়ার আগে একজন মুসলিমের কিছু কাজ করা উচিত।
বিশুদ্ধ নিয়ত
যেকোনো আমলের জন্য নিয়ত বিশুদ্ধ করা জরুরি। নিয়তের শুদ্ধতা ছাড়া আল্লাহর দরবারে কোনো আমল গ্রহণযোগ্য নয়। হজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও মহান ইবাদতের জন্যও নিয়তের বিশুদ্ধতা জরুরি।
গুনাহ থেকে তওবা
হজের মাধ্যমে ফরজ বিধান পালন করা হয়। একই সঙ্গে হজ পালনের কারণে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে গুনাহ মুক্ত করে দেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ইসলাম গ্রহণ পূর্ববর্তী সব অন্যায় মিটিয়ে দেয়। হিজরত আগের গুনাহ মিটিয়ে দেয় এবং হজও আগের সব পাপ মুছে দেয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১২১)
হজ থেকে একেবারে গুনাহ মুক্ত হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে পূর্বের গুনাহের কারণে তওবা করে পবিত্র হওয়া জরুরি।
মা-বাবার দোয়া ও অনুমতি নেওয়া
হজ কবুলের জন্য নিজের মা-বাবা ও মুরব্বিদের কাছে দোয়া চেয়ে নিতে হবে। এবং মা-বাবার অনুমতি নেওয়াও জরুরি। তাদের কেউ অসুস্থ থাকলে তাদের অনুমতি নিয়ে হজে যেতে হবে।
পরিবারের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা
কোনো ব্যক্তির নিজের এবং পরিবারের লোকজনের প্রয়োজনীয় ভরণপোষণের অতিরিক্ত মক্কায় গিয়ে হজ করে আসা পরিমাণ সম্পদ থাকলে হজ ফরজ হয়। তাই হজ করতে গেলে নিজের অনুপস্থিতিতে পরিবারের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করুতে হবে।
ঋণ পরিশোধ করা
কেউ ঋণগ্রস্ত থাকলে হজের সফরে বের হওয়ার আগেই সব ঋণ পরিশোধ করুন। ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে হজের সফরে বের হওয়ার আগে পাওনাদারের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া উচিত। পাওনাদারের অনুমতি ছাড়া হজে যাওয়া মাকরুহ।