ভারতশাসিত কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে ভারতের প্রত্যাশা অনুযায়ী শক্ত ভাষা ব্যবহার করা হয়নি। আর এটিকে কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে।
কারণ ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর যে কঠোর ভাষায় ভারতের পক্ষে বিবৃতি এসেছিল, এবার তার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর জাতিসংঘের বিবৃতিতে ‘ভারত’ শব্দের উল্লেখ করা হয়নি। বরং ‘সব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের’ কথা বলা হয়েছে।
এই বিবৃতির খসড়া যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব করেছিল, তবে তা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়নি। এতে বোঝা যাচ্ছে, পাকিস্তানের সক্রিয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বিবৃতির ভাষা নরম রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, গত ২২ এপ্রিলের হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। দুই পক্ষই নিজেদের কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে এনেছে। ভারত ঐতিহাসিক সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করেছে, যার জবাবে পাকিস্তান তার আকাশপথ ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তিনি একটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য তদন্তে অংশ নিতে প্রস্তুত।
এছাড়া পাকিস্তান শুধু ভারতের প্রত্যাশিত কিছু বিতর্কিত শব্দ বিবৃতিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া ঠেকাতেই সক্ষম হয়নি, বরং “জম্মু ও কাশ্মির” শব্দটিও বিবৃতিতে যুক্ত করাতে পেরেছে।
ভারতের ইচ্ছা ছিল শুধু “পেহেলগাম” উল্লেখ করে এমন একটি আবহ তৈরি করা, যেন এই এলাকা পুরোপুরি ভারতের অংশ। কিন্তু পাকিস্তানের কূটনৈতিক উদ্যোগের ফলে জম্মু ও কাশ্মিরের বিতর্কিত মর্যাদা আন্তর্জাতিকভাবে আবারও উত্থাপিত হলো।
এছাড়া, জাতিসংঘের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সংস্থাটি কাশ্মির অঞ্চলের পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা পাকিস্তান ও ভারতকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে না যায়।