প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যেতে রাজি বলে জানিয়েছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে সরকার যখন নির্বাচন করতে পারবে, আমরা সেই নির্বাচনে যেতে রাজি আছি।’
শনিবার (২১ জুন) সকালে যশোরে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জামায়াত সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি করে আসছে। আধুনিক গণতান্ত্রিক ৬০ থেকে ৬৫ দেশে বর্তমানে এ পদ্ধতির নির্বাচন প্রচলিত। এ নির্বাচনে মানুষ ব্যক্তিকে নয়, দলকেই ভোট দেয়। দলের ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদে তাদের আসন পাবে। যেহেতু এখানে ব্যক্তিস্বার্থ জড়িত নয়, সে কারণে এখানে পেশি শক্তি ও কালো টাকার ব্যবহার হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বক্তৃতার সময় আমরা বলবো, ব্যক্তির চেয় দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। কিন্তু কাজের সময় দেশের চেয়ে দল, আর দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়, এ মার্কা রাজনীতি করে দয়া করে কেউ দেশ-জাতির ক্ষতি করবেন না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে এসেছি, অথচ আমাদের রাষ্ট্রীয় সমস্যাগুলো, গণতান্ত্রিক সুযোগগুলো, ভোটাধিকার এখনও সুনিশ্চিত করতে পারিনি।’
জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় এ নেতা বলেন, ‘আমরা অন্তর্বতী সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু, জাতিরকাছে তাদের যে কমিটমেন্ট সেটি রক্ষা করতে হবে। সরকারের শিরদাঁড়া সোজা রাখতে হবে, নিরপেক্ষ থাকতে হবে। আগামী নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হয়, তাহলে জাতির সামনে মহাদুর্যোগ নেমে আসবে।’
জাতীয় ঐক্য করতে না পারার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার অল্পদিনের মধ্যে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশ উন্নতি করেছে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে। কিন্তু আমরা পারছি না। আমরা জাতিকে বিভক্ত করেছি ঝগড়াঝাটি, বিতর্ক, অনৈক্য ও অতীতের নানান অপ্রয়োজনীয় মীমাংসিত ইস্যুকে সামনে এনে। যারা জাতিকে এভাবে বিভক্ত করছে, আগামী নির্বাচনে তাদের পরাজিত করতে হবে।’
গোলাম পারওয়ার বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যদি কেউ ভোট ডাকাতি করে, ভোটাধিকার হরণ করে, কালো টাকা, পেশি শক্তি দিয়ে আবার ২০১৪, ১৮ ও ২৪ এর মতো পরিস্থিত করতে চায়, দেশের মানুষ সমস্ত শক্তি দিয়ে তাদের রুখে দাঁড়াবে। আমরা যদি তা না পারি, তাহলে আমাদের রক্তদান সব বৃথা হয়ে যাবে।’