33586

06/27/2025 ৩৫ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি, ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন

৩৫ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি, ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ জুন ২০২৫ ১৯:২৪

মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে জামানত ছাড়াই ৩৫ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন এবং পরে সেই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেড (বর্তমানে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড)-এর সাবেক চেয়ারম্যান, পরিচালক, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এই মামলায় দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় অপরাধ গণ্য করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিষয়টি জানিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আখতারুল ইসলাম।

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে এবং প্রতারণামূলক উদ্দেশ্যে গ্রাহকের ঋণপরিশোধ সক্ষমতা যাচাই না করে, কোনো প্রকার সহায়ক জামানত গ্রহণ না করেই, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গুদাম পরিদর্শন ছাড়াই মাত্র পাঁচ কার্যদিবসে ৩৫ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দেন। পরবর্তীতে ওই ঋণের অর্থ প্রকৃত ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করে লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করে মোট ২৯ কোটি ১৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। গ্রাহকের আগের ঋণ পরিশোধ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থ চলাচলে ঋণের টাকা ব্যবহৃত হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন সাদ মুসা গ্রুপের কর্ণধার এবং সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ মোহসিন, তার স্ত্রী শামীমা নার্গিস চৌধুরী, যিনি সায়মা সামিরা টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান। এছাড়া এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার, এবং একাধিক সাবেক পরিচালক ও শীর্ষ কর্মকর্তা মামলার তালিকায় আছেন। একই সঙ্গে ব্যাংকের বর্তমান নাম গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড হলেও, ঘটনাটি ঘটেছে পুরোনো পরিচালনা পর্ষদের আমলে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ব্যাংকের ক্রেডিট বিভাগ এবং শাখা কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণ মঞ্জুরের প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণরূপে দায়িত্বহীনতা ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সক্ষমতা, কার্যক্রম কিংবা স্থায়ী সম্পদের কোনো যথাযথ মূল্যায়ন ছাড়াই, ব্যক্তিগত পরিচয় ও অভ্যন্তরীণ যোগসাজশের ভিত্তিতে এ ধরনের বিশাল অঙ্কের ঋণ অনুমোদন একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। শুধু তা-ই নয়, অর্থ ছাড়ের পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনো পর্যায়ে তদারকির উদ্যোগও নেয়নি।

দুদক জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতারণা, আত্মসাৎ এবং অর্থপাচারের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর প্রস্তুত করা হয়েছে এবং দ্রুতই মামলাটি বিচারিক কার্যক্রমে যাবে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]