কঠোর মুদ্রানীতি বজায় রেখেও আর্থিক সংকটে থাকা ১২টি ব্যাংককে প্রায় ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শনিবার (২৮ জুন) প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই সহায়তা দেশের ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
সহায়তা পাওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যেগুলোর আর্থিক অবস্থান দুর্বল এবং যেগুলোর একীভূতকরণ পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, গ্রাহকদের আমানত পরিশোধ নিশ্চিত করতে ১০টি ব্যাংককে ডিমান্ড লোন আকারে ৩৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ৯টি ব্যাংকের চলতি হিসাবের ঘাটতির বিপরীতে আরও ১৯ হাজার কোটি টাকা ডিমান্ড লোনে রূপান্তর করা হয়েছে, যা ব্যাংকগুলোর তারল্য পরিস্থিতি সাময়িকভাবে স্বস্তিতে আনতে সাহায্য করেছে।
এই সহায়তাপ্রাপ্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড (বিসিবিএল), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), বেসিক ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। উল্লেখযোগ্যভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছে, যার পরিমাণ ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আর্থিকভাবে দুর্বল পাঁচটি বেসরকারি ইসলামী ব্যাংককে খুব শিগগিরই একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে থাকলেও এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে এবং ভবিষ্যতের সরকার এ পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গভর্নর আরও জানান, এই ব্যাংকগুলোতে ইতোমধ্যে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মের কারণে চিহ্নিত ৬টি ব্যাংক আগামী জুলাইয়ের মধ্যে একীভূত করা হতে পারে। সাময়িকভাবে এগুলো সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে, পরবর্তী সময়ে পুনর্গঠনের পর সরকারি ও আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে মালিকানা হস্তান্তর করা হবে।