প্রায় এক দশক আগে রাজধানীর গুলশানে ইতালির নাগরিক ও নেদারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিসিও-বিডির কর্মকর্তা তাবেলা সিজারকে হত্যার দায়ে তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে সাজাপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় আদালত বিএনপি নেতাসহ চারজনকে খালাস দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামেদুল ইসলাম এ রায় দেন।
এ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো– তামজিদ আহমেদ ওরফে রুবেল, রাসেল চৌধুরী ও মিনহাজুল আরেফিন ওরফে ভাগনে রাসেল। মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ূম ও তার ভাই আবদুল মতিন এবং শাখাওয়াত হোসেন ও সোহেলকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম কাইয়ুম বলেন, ‘আদালত বিচার বিশ্লেষণ করে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছেন। আমরা পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাব।’
আসামি পক্ষের আইনজীবী ব্যরিস্টার ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এই মামলায় আদালত তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন। এজন্য আমরা আসামিপক্ষ খুবই অসন্তুষ্ট। যে ৪২ জন স্বাক্ষী প্রসিকিউশন উপস্থাপন করেছে, তাদের কেউই আসামিদের শনাক্ত করতে পারেনি। তদন্ত কর্মকর্তাও ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজে সাজাপ্রাপ্তদের শনাক্ত করতে পারেননি। আমি মনে করি, আসামিদের এই সাজা প্রদান সমিচিন হয়নি। রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের পশ্চিম প্রান্তে গুলশান অ্যাভিনিউ সংলগ্ন গভর্নর হাউজের দক্ষিণের দেয়াল ঘেঁষা ফুটপাতে তাবেলা সিজারকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। ওই সময় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ওই হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইসিসিও কো-অপারেশনের বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি হেলেন দার বিক বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়।
২০১৬ সালের ২৮ জুন ঢাকার আদালতে বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুমসহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক গোলাম রাব্বানী। মামলায় বিচার চলাকালে ৭০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪২ আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে।
ডিএম /সীমা