লর্ডসে ভারত ও ইংল্যান্ডের চলমান তৃতীয় টেস্টে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ডিউক বল। বলের মান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কয়েক ওভার খেলার পরই বলের আকৃতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বল নিয়ে লাগাতার নিজেদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছে ভারতীয় শিবির। লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে জসপ্রীত বুমরাহও ইঙ্গিতপূর্ণ জবাবে বিরক্তি বুঝিয়ে দেন।
গতকাল (শুক্রবার) ইংল্যান্ডের ইনিংসের দ্বিতীয় নতুন বলে ১০.৪ ওভার খেলা হওয়ার পরই তার আকার নষ্ট হয়ে যায়। বল পরিবর্তন করেন আম্পায়াররা। ভারতীয় দলকে যে বল দেওয়া হয়, তা পছন্দ হয়নি শুভমান গিলদের।
নিয়ম অনুযায়ী, ১০ ওভার মতো খেলা হয়েছে, এমন বলই পরিবর্ত হিসাবে দেওয়ার কথা। কিন্তু পরিবর্তিত বলটি দেখে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মনে হয়েছিল, ১০ ওভারের অনেক বেশি ব্যবহৃত বল দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে অধিনায়ক শুভমানকে আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায়। মোহাম্মদ সিরাজও আপত্তি জানান। যদিও সেই বলটিও বদলাতে হয় ৮ ওভার খেলার পর।
এ ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় বুমরাহকে। তিনি খানিকটা মজার ছলে বিরক্তি বুঝিয়ে দেন। বুমরাহ বলেন, ‘বার বার বল পাল্টাতে হচ্ছে। এতে আমাদের কিছু করার নেই। এ সব নিয়ে কথা বলে আমি জরিমানা দিতে চাই না। দীর্ঘ সময় খেলার জন্য কঠোর পরিশ্রম করি। তাই কোনও বিতর্কিত মন্তব্য করব না। তাহলে ম্যাচ ফি কেটে নেওয়া হবে।’
ম্যাচের প্রথম দিন নীতীশ কুমার রেড্ডি বলেছিলেন, বুমরাহের পরামর্শ মেনেই সাফল্য পেয়েছেন। তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় ভারতের পেস বোলারকে। এ বারও রসিকতা করেন বুমরাহ। কিছুটা অভিযোগের মোড়কে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমত, এটা পুরো অসত্য। ও আমাকে কিছুই জিজ্ঞেস করেনি। তবে আমাদের দলের তরুণরা ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। ওদের প্রচুর পরামর্শ বা তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। ওদের কখনও প্রয়োজন হলে সাহায্য করার চেষ্টা করি। ওদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিই। এখানে খেলার অভিজ্ঞতা ওদের বলি।’
তরুণ সতীর্থদের উৎসাহিত করা নিয়ে বুমরাহ আরও বলেন, ‘তরুণদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। ওদের প্রয়োজন হলে সাহায্য করি। তবে সব কিছুর মধ্যে আগ বাড়িয়ে ঢুকতে যাই না। অযথা পরামর্শও দিই না। নিজে যেটা করি, সেটাই ওদের করতে বলি। তার মানে সবার ক্ষেত্রে সেটা কার্যকর না-ও হতে পারে। কারণ আমার বল করার ধরন বা টেকনিক আলাদা। আমি নিজের মতো করে করার চেষ্টা করি। ওদের ক্ষেত্রে এগুলো সবই আলাদা। তবে ওরা কোনও সাহায্য বা পরামর্শ চাইলে সাধ্যমতো চেষ্টা করি।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৭৪ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ। তবু তেমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়নি তাকে। এ নিয়ে বলেছেন, ‘‘খুব ক্লান্ত ছিলাম। তাই আর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করিনি। তা ছাড়া আমার বয়স ২১-২২ নয় যে, ৫ উইকেট নিয়ে লাফালাফি করব। পরের বল করার জন্য নিজের জায়গায় ফিরে যাওয়াই ভাল।’’ লর্ডসের ‘অনার্স বোর্ড’এ নাম ওঠা নিয়ে বলেছেন, ‘‘এখানকার অনার্স বোর্ডে নাম তুলতে পেরে ভালই লাগছে। পরে ছেলেকে গল্প করার মতো একটা ব্যাপার।’’
এই নিয়ে ভারতের বাইরে টেস্টে ১৩ বার ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট নিলেন। ভেঙে দিয়েছেন কপিল দেবের নজির। তিনি দেশের বাইরে টেস্টে ১২ বার ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছিলেন। ৫ উইকেট নেওয়ায় শুক্রবার লর্ডসের ‘অনার্স বোর্ড’-এ নাম উঠেছে বুমরাহর।
ডিএম /সীমা