শরীর সুস্থ রাখতে চাইলে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখা ভীষণভাবে জরুরি। কারণ কিডনি যদি একবার বিকল হয়ে যায়, তাহলে শরীরে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপরে প্রভাব পড়বে। তাই কিডনি সুস্থ রাখতে শরীর সতেজ রাখা খুবই দরকার। কিডনি হলো শরীরের সেই ছাঁকনি, যা দেহের ভেতরের নাইট্রোজেনঘটিত সব বর্জ্য ও অতিরিক্ত তরল ছেঁকে বের করে দেয়। এটি দেহের তরল ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং শরীর সজীব ও কর্মক্ষম রাখে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক যেসব খাবার খেলে কিডনি সুস্থ থাকবে।
শসা
শসাকে ফলের থেকে সবজি ভাবা হয় বেশি। তবে শরীরকে আর্দ্রতা জোগাতে শসা তরমুজের থেকেও বেশি উৎকৃষ্ট। এই ফলের ৯৫% পানি। ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি আর্দ্র রাখার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী শসা। এটি দেহকে ভেতর থেকে সজীব রাখে। শসার এই অতিরিক্ত পানি শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড ও ক্রিয়েটিনিনের মতো বর্জ্য বের করে দেয়। এতে খুব কম পরিমাণে ক্যালরি থাকে। ফলে বেশি খেলেও শরীরে মেদ জমার ভয় থাকে না। তাই কিডনি সচল রাখতে শসা, শসাযুক্ত খাবার খেতে হবে।
লেবু
প্রাত্যহিক জীবনে আমরা সকলেই কম বেশি লেবু খেয়ে থাকি। সাধারণত খাবারের স্বাদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে খাবারের সঙ্গে এটি খাওয়া হয়। আবার অনেকে এটির আচার তৈরি করেও খেয়ে থাকেন। আবার অনেকে এমনিতেই লেবু খেতে ভালোবাসেন। আবার অনেকে ডায়েট করার সময় লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন একটি করে লেবু খাওয়া যায়। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে। এই দুটিই কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়ার আশঙ্কা কমিয়ে দেয়। প্রতিদিন এই লেবুপানি বা লেবু-চা খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায়, যা কিডনির প্রদাহও কমিয়ে দেয়।
পার্সলি
পার্সলি দেখতে অনেকটা ধনেপাতার মতো। এটি খুব দরকারি একটি ঔষধি গাছ। কিডনি কার্যকর রাখতে এটি খুবই কার্যকর। পার্সলিপাতার অ্যান্টি-অক্সিডেটিভ গুণ আছে, অক্সিডেটিভ চাপ কমাতে সাহায্য করে। অনেক সময় শরীরে ক্ষতিকর রিয়্যাকটিভ অক্সিজেন স্পিসিজ বা ফ্রি র্যাডিক্যাল বা মুক্ত আয়ন তৈরি হয়, যা শরীরের কোষকে ধ্বংস করে। এটাকেই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বা চাপ বলে। এই অক্সিডেটিভ চাপ কিডনিরও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পার্সলিপাতায় ফ্ল্যাভোনয়েড-জাতীয় তিন ধরনের উদ্ভিজ্জ যৌগ রয়েছে। এসব হলো অ্যাপিজেনিন, লিউটিওলিন ও কোয়ার্সেটিন। এর সবই শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রদাহরোধী পদার্থ হিসেবে বেশ পরিচিত।
ডিএম /সীমা