36688

08/19/2025 জেলেনস্কির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সম্মতি দিয়েছেন পুতিন

জেলেনস্কির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সম্মতি দিয়েছেন পুতিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ আগস্ট ২০২৫ ১৭:৪১

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে দ্রুত বৈঠকের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রথমবারের মতো ‘একান্ত’ শান্তি সম্মেলনে বসার পথে এগোচ্ছেন।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

সোমবার ওয়াশিংটনে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প জানান, তিনি ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এরপর ফোনে পুতিনের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। এর আগে গত সপ্তাহে আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লেখেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেনের জন্য শান্তির সম্ভাবনায় সবাই খুশি।’

তিনি আরও জানান, আলোচনার পরপরই পুতিনকে ফোন করে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস বলেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই এ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে পুতিন সম্মতি দিয়েছেন। তবে তারিখ ও স্থান এখনো নির্ধারণ হয়নি।

জেলেনস্কির প্রস্তুতি

হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের জেলেনস্কি জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসতে প্রস্তুত। ক্রেমলিনের এক উপদেষ্টা বলেন, পুতিনও ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার ধারণার প্রতি ইতিবাচক।

যুদ্ধক্ষেত্রে কিছু সাম্প্রতিক অগ্রগতি সত্ত্বেও ইউক্রেন যুদ্ধ কার্যত অচলাবস্থায় পড়েছে। গত শুক্রবার ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক কোনো যুদ্ধবিরতি আনতে ব্যর্থ হলেও, জেলেনস্কি দ্রুত হোয়াইট হাউসে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে নতুন আলোচনায় বসেন।

ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় কমিশন ও ন্যাটোর নেতারাও ওয়াশিংটন বৈঠকে যোগ দেন—যা ইউক্রেনের প্রতি দৃঢ় সমর্থনের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে অগ্রগতি

ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং পুতিনও এ বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। তবে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ইউক্রেনের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন তিনি নাকচ করে দিয়েছেন। তার ভাষায়, ‘ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ইউরোপীয় দেশগুলো দেবে, যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে।’

ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে বলেন, বৈঠকটি ‘অচলাবস্থা ভাঙতে সহায়ক’ এবং খুব সফল হয়েছে। ফিনান্সিয়াল টাইমসের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনতে ইউক্রেন রাজি হয়েছে, যার অর্থায়ন করবে ইউরোপ—বদলে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। জেলেনস্কি অবশ্য পরে ৯০ বিলিয়ন ডলারের একটি প্যাকেজের কথা জানান।

উদ্বেগ ও সতর্কতা

তবে ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতি এ আশঙ্কাও প্রকাশ করে যে, ট্রাম্প আবারও পুতিনের দিকে ঝুঁকতে পারেন। বৈঠকের আগে তিনি ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া ছেড়ে দিতে ও ন্যাটো সদস্যপদ অর্জনের প্রচেষ্টা ত্যাগ করতে চাপ দেন—যা পুতিনের মূল দাবি।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সতর্ক করেছেন, শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি না হলে রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকস স্টুব বলেন, ‘পুতিনকে বিশ্বাস করা যায় না।’

এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর মের্ৎস বলেন, আলোচনার বিনিময়ে ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চল ছাড়তে হবে—রাশিয়ার এমন দাবি যুক্তরাষ্ট্রকে ফ্লোরিডা ছাড়তে বাধ্য করার প্রস্তাবের মতোই অগ্রহণযোগ্য।

ডিএম/রিয়া

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]