রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের সুরক্ষা নিশ্চিতে সেনা পাঠাতে ইচ্ছুক দেশগুলোকে সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, কোনো দেশ যদি ইউক্রেনের পক্ষে সেনা পাঠায়, তাহলে সেসব সেনাদের ‘বৈধ লক্ষ্যবস্তু’ হিসেবে বিবেচনা করবে রুশ বাহিনী।
আজ শুক্রবার রাশিয়ার দূর পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভ্লাদিভস্তকে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। এ অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল রাশিয়ার ইকোনমিক ফোরাম।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে পুতিন বলেন, “আমি এই সময়ে ইউক্রেনে বিদেশি সেনা পাঠানোর কোনো অর্থ দেখতে পাচ্ছি না। ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য বিদেশি সেনাদের কেন প্রয়োজন— তা ও আমার কাছে স্পষ্ট নয়।”
“তবে যদি সত্যিই ইউক্রেনের নিরাপত্তার নামে সেখানে বিদেশি সেনা আনা হয় এবং রুশ বাহিনী তাদের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে পরিণত করে, তা হলে তা বৈধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।”
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের পক্ষে থাকা ৩৫টি দেশের জোট ‘কোয়ালিশন অব উইলিং’ গতকাল বৃহস্পতিবার প্যারিসে বৈঠক করেছে। জোটের অন্যতম সদস্যরাষ্ট্র ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, রুশ বাহিনী ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলে তার পরদিনই দেশটির নিরাপত্তার জন্য সেনা পাঠাবে ২৬টি দেশ। ম্যাক্রোঁ আরও বলেছেন, ‘কোয়ালিশন অব উইলিং’ এর এই উদ্যোগকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করবে বলেও জোর আশা করছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপ ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা না করা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কিয়েভের আবেদনকে ঘিরে কয়েক বছর ধরে টানাপোড়েন চলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। এই টানাপোড়েনের এক পর্যায়ে পুতিনের নির্দেশে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে শুরু হয় রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান, যা এখনও চলছে।
এই যুদ্ধ বন্ধে গত ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুতিন। সেই বৈঠকের পর এই যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেও বর্তমানে তা ফিকে হতে শুরু করেছে।
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেছিলেন, শিগগিরই পুতিন এবং জেলেনস্কির মধ্যে একটি বৈঠক হবে বলে আশা করছেন তিনি। তবে শুক্রবার ট্রাম্পের এই প্রত্যাশায় কার্যত পানি ঢেলে দিয়েছেন পুতিন।
ভ্লাদিভস্তকে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি বলেছেন, “আমি তার (জেলেনস্কি) সঙ্গে বৈঠকের কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। কারণ, এই যুদ্ধের যেসব মূল ইস্যু— সেসবের ব্যাপারে তার সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব।”
সূত্র : বিবিসি