মেক্সিকোর মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ১০ জন নিহত এবং ৬১ জন আহত হয়েছেন। সোমবার স্থানীয় সময় সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে আটলাকোমুলকো শহরে, যা মেক্সিকো রাজ্যের একটি সুপরিচিত শিল্পাঞ্চল।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
প্রশাসন জানায়, একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ডাবল-ডেকার বাসের সংঘর্ষেই এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যানজটে আটকে থাকা বাসটি রেললাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় দু’টুকরো হয়ে যায়। ট্রেনটি বাসটিকে কয়েক মিটার টেনে নিয়ে যায়।
মেক্সিকো রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় নিশ্চিত করেছে, ঘটনাস্থলেই সাত নারী ও তিন পুরুষ নিহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে অক্ষত যাত্রীদের উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় জরুরি সেবা সংস্থা, মেক্সিকান রেড ক্রস, জাতীয় জরুরি কমিশন এবং স্থানীয় পুলিশ। তারা আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি উদ্ধার অভিযান চালায়।
বাসটি রাজধানী মেক্সিকো সিটির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। ঘটনার সময় এতে প্রায় ৫০ জন যাত্রী ছিলেন। সংঘর্ষের পর পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শহর প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণহানি আমাদের গভীরভাবে শোকাহত করেছে।’
দুর্ঘটনার কারণে আটলাকোমুলকো থেকে রাজধানীমুখী মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই সড়কটি প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিক ও কর্মজীবীদের যাতায়াতের প্রধান পথ।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকোয় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ট্রেন ও যানবাহনের সংঘর্ষের ঘটনা বেড়েছে। ২০২১ সালে এমন ঘটনা ছিল ৬৭৩টি, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৭৮৪-এ। শুধু চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেই ৩৫ জন আহত ও তিনজন নিহত হয়েছেন এ ধরনের দুর্ঘটনায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে রেলক্রসিংয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাদের অভিযোগ—যথাযথ আলোকসজ্জা, সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড এবং ব্যারিয়ার না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়। সোমবারের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর আবারও এসব ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জোরালোভাবে উঠেছে।