কাতারের ওপর ইসরায়েলের অবৈধ আগ্রাসন শুধু আঞ্চলিক নয়, সব রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি তৈরি করছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এমন হুঁশিয়ারিই দিয়েছে পাকিস্তান।
একইসঙ্গে ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বানও জানিয়েছে ইসলামাবাদ। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজ।
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে ডাকা নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখার আহমদ বলেন, হামাসের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলা হয়েছে, এটি শান্তি প্রচেষ্টায় নিযুক্তদের ভূমিকা ও সুরক্ষার জন্য হুমকি।
তিনি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন। পাকিস্তান, আলজেরিয়া ও সোমালিয়ার অনুরোধে ডাকা এই বৈঠকটি দক্ষিণ কোরিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তৃতায় আসিম ইফতিখার বলেন, “পাকিস্তান অবৈধ ও উসকানিমূলক ইসরায়েলি আগ্রাসনের কঠোরতম নিন্দা জানাচ্ছে, এটি ভ্রাতৃপ্রতিম কাতারের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার ওপর বেপরোয়া ও উসকানিমূলক আঘাত।”
তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি হামলা একটি আবাসিক এলাকায় চালানো হয়েছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ নাগরিকদের জীবনকে বিপন্ন করেছে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করার ধারাবাহিক নকশারই অংশ।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কাতারের সরকার ও জনগণের প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করা হয় এবং তাদের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় জাতিসংঘ সনদের আলোকে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকারকে সমর্থন জানানো হয়।
আসিম ইফতিখার আরও বলেন, “ইসরায়েলের এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ তার আন্তর্জাতিক আইনকে উপেক্ষার সামগ্রিক নীতিরই প্রতিফলন। এটি অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়াচ্ছে। গাজায় নির্মম সামরিক অভিযান, সিরিয়া, লেবানন, ইরান ও ইয়েমেনে বারবার সীমান্ত অতিক্রম করে হামলা— সবকিছুই জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৩৩১৪ নম্বর প্রস্তাবে সংজ্ঞায়িত এ ধরনের আগ্রাসন বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে, আইনের শাসনকে দুর্বল করছে এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিচ্ছে, যা সব রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”