বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়ি ভাতা ২০ শতাংশ বৃদ্ধির দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট। দাবি আদায়ে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) মুখে কালো কাপড় বেঁধে রাজধানীতে মিছিল করবে সংগঠনটি।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশনস্থলে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজীজি।
তিনি বলেন, আজ থেকে আমাদের কর্মসূচি আমরণ অনশনে রূপ নিয়েছে। এরইমধ্যে চারজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রায় সবাই অসুস্থ। এ অনশনে যদি কোনো প্রাণহানি ঘটে, এর দায়ভার নিতে হবে শিক্ষা উপদেষ্টা সি. আর. আবরারকে।
অধ্যক্ষ আজীজি অভিযোগ করেন, আপনারা যদি আবরার সাহেবের কূটচালে পা দিয়ে শিক্ষকদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ান, তাহলে সারা দেশ থেকে লং মার্চ করে তার অফিসে তালা দেওয়া হবে। আমরা আবরারের কোনো সিদ্ধান্ত মানি না, তাকে উপদেষ্টা হিসেবেও মানি না। তিনি যদি চান, তাহলে দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন দিতে হবে, নয়তো তাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়তে হবে।
তিনি আরও জানান, যারা শহীদ মিনারে উপস্থিত হতে পারবেন না, তারা প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত জেলা ও উপজেলা সদরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব সময় নিয়েছেন। কিন্তু তার ফোন দেওয়ায় কিছু হবে না, বাস্তবে প্রজ্ঞাপন দিতে হবে। যদি তার অনুরোধের পরও প্রজ্ঞাপন জারি না হয়, তাহলে আবরার সাহেবকে টেনেহিঁচড়ে মন্ত্রণালয় থেকে বের করে দেওয়া হবে। সচিবালয়ের প্রতিটি পয়েন্টে আমরা অবস্থান নেব।
তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা ২২ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এরপরও যদি প্রজ্ঞাপন না হয়, যে পরিবেশ তৈরি হবে তা বাংলাদেশ কখনও দেখেনি। সবাইকে ঢাকায় এনে যমুনা ঘেরাও করব।
অধ্যক্ষ আজীজি বলেন, আমরা শুনেছি বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ চলছে। শিক্ষক ভাইদের অনুরোধ করব—এই প্রশিক্ষণ বন্ধ করে আপনারা আন্দোলনে যোগ দিন। আবরারের অধীনে কোনো প্রশিক্ষণ হতে পারে না।
উল্লেখ্য, মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং উৎসবভাতা ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে ১২ অক্টোবর থেকে আন্দোলনে আছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
সেদিন সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলেও দুপুরে পুলিশের অনুরোধে তারা শহীদ মিনারে যান। পরে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান ও লাঠিপেটায় একপর্যায়ে শিক্ষকরা সরে যান। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ অক্টোবর থেকে সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতি চলছে। শিক্ষক-কর্মচারীরা এরপর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও শহীদ মিনারে অবস্থান, সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ ও শাহবাগ অবরোধসহ ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছেন।