জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরে গণভোট ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি দিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ারের নেতৃত্বে যমুনায় পৌঁছেছেন আট ইসলামী দলের প্রতিনিধিদলের নেতারা।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার পর প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় তারা পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।
প্রতিনিধিদলের অন্যরা হলেন- জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) সেক্রেটারি মুহা. নিজামুল হকসহ অন্য দলের শীর্ষ নেতারা।
এদিন পাঁচ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি দিতে যমুনা অভিমুখে রওনা দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। তবে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে আসতেই তাদের আটকে দেয় পুলিশ।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল থেকেই মতিঝিলের শাপলা চত্বর ও পল্টন মোড়ে জড়ো হতে থাকেন জামায়াতসহ অন্যান্য দলের কর্মী-সমর্থকরা। বেলা ১১টার পর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে পুরানা পল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন তারা। এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য শেষে দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা নিয়ে রওনা হয় আটটি ইসলামি দল।
এদিকে, আট ইসলামী দলের যুগপৎ এ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ-র্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনী। শাহবাগ, কাকরাইল, পল্টনসহ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশ এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।
জামায়াত ছাড়া অন্য দলগুলো হলো- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারকে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানান জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
হামিদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমরা লিখিতভাবে আমাদের দাবি তুলে ধরবো। এজন্য এসব দাবি আগের মতোই একেবারে সুস্পষ্ট। অর্থাৎ গণভোট যেন অবশ্যই নির্বাচনের আগে হয় এবং পৃথক দিবসে হয়।