দেশের বহুল আলোচিত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে রোববার। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ ও তার সহযোগী পুলিশ সদস্যদের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। হত্যাকাণ্ডের পর ২০২০ সালে পুলিশের ভাষ্য ছিল , ৩১ জুলাই রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান।
পুলিশ দাবি করে, তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মেজর সিনহা অস্ত্র তাক করেন। ফলে তারা গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এরপর সিনহার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দিয়েও ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়।
ওসি প্রদীপ শুরুতে এই হত্যাকাণ্ডকে ক্রসফায়ার বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে আসল ঘটনা সামনে চলে আসে। এরপর ওসি প্রদীপ ও বাকিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তাদের গ্রেফতার করা হয়। শুরু হয় বিচার কার্যক্রম। এরপর অল্প সময়ের মধ্যে চার্জ গঠন ও রায় দেওয়া হয়।
২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারী হত্যার মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এতে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও এসআই লিয়াকতকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া এ মামলায় ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুর দুই বছর উপলক্ষে গতকাল শনিবার মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস শোকার্ত গলায় জানান, প্রাণবন্ত যুবক সিনহাকে অকালে হারিয়ে দীর্ঘদিনেও শোক কাটেনি পরিবারে। তবে তাঁর জন্য এখন তাঁদের বেশি গর্ব হয়। ঘটা করে মৃত্যুর দিবস পালন করেন না তাঁরা। প্রায়ই তাঁরা বিভিন্নভাবে সিনহার জন্য দোয়ার আয়োজন করেন। হতদরিদ্রদের মধ্যে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দানও করেন। গতকাল বনানীতে কবর জিয়ারত করতে যান স্বজনরা। বন্ধু, সহপাঠী, আত্মীয়-স্বজনসহ অনেকেই পরিবারের খোঁজ নিচ্ছেন। তাঁরা সবাই এখন হত্যা মামলার বিচার কার্যকরের অপেক্ষায় আছেন।
উল্লেখ্য,সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ব্যক্তিগত গাড়িতে করে কয়েকজন সঙ্গীসহ টেকনাফ থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন। মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করার কথা বলে তাকে গুলি করে হত্যা করে।