6

04/20/2024 অ্যাওয়ার্ড পেলেন কারাবন্দি কার্টুনিস্ট কিশোর

অ্যাওয়ার্ড পেলেন কারাবন্দি কার্টুনিস্ট কিশোর

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

৫ অক্টোবর ২০২০ ০৪:১৩

‘গুজব’ ছড়ানোর অভিযোগে পাঁচ মাস আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির ‘রবার্ট রাসেল কারেজ ইন কার্টুনিং অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কার্টুনিস্ট রাইটস নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনাল (সিআরএনআই) রোববার তাদের ওয়েবসাইটে চলতি বছরের পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশের কিশোরের নাম ঘোষণা করে।

সিআরএনআই বলেছে, একজন কার্টুনিস্ট ও অধিকারকর্মী হিসেবে কিশোরের কাজের সঙ্গে তারা এক দশকের বেশি সময় ধরে পরিচিত।

“২০১০ সালে নিখোঁজ শ্রীলঙ্কান কার্টুনিস্ট প্রজেথ একনালিগোডা এবং ২০০৭ সালে কারাবন্দি বাংলাদেশি কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমানের পক্ষে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে। বাংলাদেশে তিনি সিআরএনআইয়ের নেতৃস্থানীয় একজন। আর এ কারণেই ‘বিদেশি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে’ কাজ করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হচ্ছে।”

বিবৃতিতে বলা হয়, আহমেদ কবির কিশোর কেবল কার্টুনিস্টদের পক্ষে দাঁড়ানানি, হিজরা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার, স্বাস্থ্য ও ভোক্তা অধিকার এবং বাংলা ভাষার পক্ষে তিনি সক্রিয় ছিলেন।

“গত এপ্রিল এবং মে মাসে তিনি ফেইসবুকে ‘লাইফ ইন দ্য টাইম অব করোনা’ শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে কার্টুন প্রকাশ করেন, যেখানে এই মহামারী রোধে সমাজের ভূমিকা নিয়ে বিদ্রুপ করা হয়েছিল আর সরকার যেভাবে জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি সামলেছে তার সমালোচনা করা হয়েছিল।”

করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে ৫ মে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং অনলাইনে লেখালেখিতে সক্রিয় ব্যবসায়ী মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।

পরে রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ভূঁইয়া এবং বিএলআই সিকিউরিটিজের কর্ণধার ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নানকেও গ্রেপ্তার করে একই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

জার্মানিতে থাকা ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, সুইডেনে থাকা সাংবাদিক তাসনিম খলিলও রয়েছেন এই মামলার ১১ আসামির মধ্যে।

অন্য আসামিরা হলেন- জুলকারনাইন, আসিফ ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ, সাহেদ আলম ও ফিলিপ শুমাখার।

র‌্যাবের করা ওই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ফেইসবুক ব্যবহার করে জাতির জনক, মুক্তিযুদ্ধ, করোনাভাইরাস মহামারী সম্পর্কে গুজব, রাষ্ট্র/সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিপ্রায়ে অপপ্রচার বা বিভ্রান্তি ছড়ানো, অস্থিরতা-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারার অভিযোগ আনা হয়।

এজাহারে বলা হয়, ‘I am Bangladeshi’ পেইজ থেকে রাষ্ট্রের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হয়। ওই পেইজের এডিটর সায়ের জুলকারনাইন, আহমেদ কবির কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, মুশতাক আহমেদ, স্বপন ওয়াহিদ দীর্ঘদিন পেইজটি পরিচালনা করছেন।

কিশোরকে গ্রেপ্তারের বিবরণ দিয়ে এজহারে বলা হয়, আটকের সময় তার বাসা থেকে দুটি মোবাইল ফোন, একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক, একটি সিপিইউ, ২০০টি সিডি উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা মোবাইল ফোনের একটিতে `আমি কিশোর্’ আইডি লগইন করা ছিল।

“আলামত পর্যালোচনা করে র‌্যাব রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, করোনাভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পেয়েছে।”

দিদারুল ও মিনহাজ মান্নান ওই মামলায় জামিন পেলেও কিশোর ও মুশতাক এখনও জামিন পাননি। ১৭ মে, ১৬ জুন ও ২৩ শে জুলাই তিনবার কিশোরের জামিন আবেদন নাকচ করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে সিআরএনআইয়ের বিবৃতিতে।

সেখানে বলা হয় আইন ও সালিশ কেন্দ্র, কার্টুনিং ফর পিস, ফোরাম ফর ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন, বাংলাদেশ (এফএক্সবি) ও রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এর পাশাপাশি সিআরএনআই কিশোরের মুক্তির জন্য আবেদন করলেও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।

“মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার কার্টুনিস্টদের দুর্দশার স্বীকৃতি দিতেই রবার্ট রাসেল কারেজ ইন কার্টুনিং অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। আমাদের বিচারে আহমেদ কবির কিশোরের ক্ষেত্রে সে বিষয়টিই ঘটেছে,” বলেছে সিআরএনআই।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]