6153

09/20/2024 রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে লাভবান হবে বাংলাদেশ

রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে লাভবান হবে বাংলাদেশ

ডেস্ক রিপোর্ট

২০ আগস্ট ২০২২ ২০:৪০

দেশে পরিশোধিত তেল সরবরাহে রাশিয়ার আগ্রহের পর তাদের প্রস্তাব পর্যালোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ত কোম্পানি রাসনেফটসহ কয়েকটি কোম্পানির প্রস্তাব বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। একাধিক প্রস্তাব অনুযায়ী, রাশিয়া থেকে বাংলাদেশ ডিজেল আমদানি শুরু করলে প্রতি লিটারের দাম প্রায় ৪০ টাকা পড়বে। তবে রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার কারণে এবং ডলারের পরিবর্তে রাশিয়ান মুদ্রা রুবলে লেনদেন করা অনিশ্চিত থাকায় শেষ পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত কম দামের এ জ্বালানি তেল দেশে আনা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে গত সপ্তাহে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে ঐ প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করতে বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (কমার্শিয়াল অ্যান্ড অপারেশন) মোস্তফা কুদরত ইলাহীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।


বিপিসির একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়ান কোম্পানিটি প্রতি টন ডিজেলের দাম ৪২৫ মার্কিন ডলার প্রস্তাব করেছে। এতে প্রতি ব্যারেলের ( প্রায় ১৫৯ লিটার) মূল্য দাঁড়ায় সাড়ে ৫৭ ডলার। তাহলে ১১০ টাকা সমান ১ ডলার হিসেবে প্রতি লিটার ডিজেলের আমদানি খরচ পড়বে ৪০ টাকার কিছু কম। বর্তমানে প্রতি ব্যারেল ডিজেল আমদানি করতে ১২৫ ডলারের মতো খরচ পড়ছে। অপরিশোধিত ক্রুড অয়েল আমদানিতেও ৯০-৯২ ডলার খরচ পড়ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিপিসি রাশিয়ার প্রস্তাবের কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়নসহ পর্যালোচনা তাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরবে। এর সঙ্গে ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বিধায় সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বকেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। কেননা ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর নানা রকম নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। এর মধ্যেই ভারত ও চীন দেশটি থেকে বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি করে ব্যাপকভাবে লাভবান হয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিল-মে মাসে রাশিয়া থেকে মাত্র ৪৪ কোটি ১০ লাখ ডলারের তেল কিনেছিল ভারত। আর ২০২২ সালে শুধু মে মাসেই ১৯০ কোটি ডলারের তেল কিনেছে। আগের বছরে চাহিদার মোট দুই শতাংশ রাশিয়া থেকে কিনত। এবার এপ্রিল-মে মাসে চাহিদার ১০ শতাংশ তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে। জুন-জুলাইয়ে আমদানির পরিমাণ আরো বেড়েছে।

তবে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের বড় অংশ আমেরিকা-ইউরোপ থেকে আসে। তাদের মিত্র দেশগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ আমদানিও করতে হয় বাংলাদেশকে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আনলে বাংলাদেশ কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্য পরিচালনায় বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সব বাধা পেরিয়ে কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করা গেলে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ায় দেশে জ্বালানি তেলের রেকর্ড দাম বাড়িয়েছে সরকার। সবচেয়ে বেশি ব্যবহূত জ্বালানি তেল ডিজেল লিটার প্রতি ৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বর্তমানে কমছে এবং আগামী এক বছর এ দামে নিম্নগতি থাকবে বলেই পূর্বাভাস রয়েছে। তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে জনজীবনে সার্বিক খরচের ভার বেড়েছে। মূল্যস্ফীতির কারণে নাভিশ্বাস উঠেছে বেশির ভাগ জনগণের।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]