6328

04/20/2025 টাকার অভাবে মৃত ভাইকে কোলে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা

টাকার অভাবে মৃত ভাইকে কোলে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৩০ আগস্ট ২০২২ ০১:৪৭

দুই বছর বয়সী শিশু কালা গাড়ির নিচে পিষ্ট হয়ে মারা যায়। কিন্তু অর্থের অভাবে মৃত শিশুটির বাবা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বাড়ি নিতে পারছিলেন না। তাই বাধ্য হয়েই শিশু কালার মরদেহ হাতে তুলে হাঁটা শুরু করল তারই ১০ বছর বয়সী বড়ভাই। গত শনিবার (২৭ আগস্ট) চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বাগপতের জেলা হাসপাতালে।

সোমবার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাড়ির নিচে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুর পর শনিবার (২৭ আগস্ট) উত্তরপ্রদেশের বাগপতের জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয় ২ বছর বয়সী শিশু কালার। ময়নাতদন্তের পরে মরদেহ বাড়ি নেওয়ার জন্য বহু অনুরোধ করেও কোনো গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেনি মৃতের পরিবার।

পরে বাধ্য হয়ে কালার মরদেহ হাতে তুলে হাঁটতে শুরু করে তার ১০ বছর বয়সী বড়ভাই। পেছনে হাঁটছিলেন তার বাবাও। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ভিডিও করা শুরু করলে এবং কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করা হলে তাদেরকে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। মরদেহ কোলে নিয়ে হাঁটার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

এনডিটিভি জানিয়েছে, নিহত শিশু কালার বাবার নাম প্রবীণ কুমার। তিনি বাগপতের একজন দিনমজুর। বাগপতের জেলা হাসপাতাল থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে শামলি জেলার লিলনখেডিতে নিজেদের পারিবারিক গ্রামে যাওয়ার জন্যই তারা একটি গাড়ি খুঁজছিলেন। তবে সেটি ভাড়া করার জন্য এক হাজার রুপির প্রয়োজন ছিল, যা প্রবীণ কুমারের কাছে ছিল না।

সংবাদমাধ্যম আরও জানায়, যে কিশোরটি নিজের কোলে সাদা কাপড়ে মোড়া শিশুটিকে নিয়ে হাঁটছিল সেই শিশুটি তার ভাই। বয়স মাত্র দু’বছর। অভিযোগ, শিশুটি কাঁন্না করায় সৎমা তাকে রাস্তায় চলন্ত গাড়ির নিচে ছুড়ে ফেলেন। এতে চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় শিশুটির।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে বাগপত হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর প্রবীণ কুমার তার বছর দশেকের ছেলে সাগরকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন। সন্তানের ময়নাতদন্ত হওয়ার পর মরদেহ তুলে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দিনমজুর প্রবীণ কুমারের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। গাড়ি ভাড়া করে সন্তানের দেহ ৫০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবেন, সেই টাকাও ছিল না প্রবীণের কাছে। ফলে বাধ্য হয়েই সন্তানের মরদেহ নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে শুরু করেন তারা।

এই দৃশ্য নজরে পড়া মাত্র স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপরই গাড়ির ব্যবস্থা হয়।

বাগপত হাসপাতালের সিএমও জানান, যারা শববাহী গাড়ি চান, তাদেরই দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কয়েক মিনিট দেরি হয়েছিল। ততক্ষণে ওই ব্যক্তি তার সন্তানের মরদেহ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করেন। বিষয়টি তাদের নজরে আসতেই গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন। শববাহী ভ্যান আসতে কেন দেরি হলো সেটিও খতিয়ে দেখবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]