কেএফসি‘র যাত্রা শুরু কর্নেল হারল্যান্ড স্যান্ডার্সের হাত ধরে। অনেক বছর পার হয়ে গেলেও কর্নেল স্যান্ডার্সের সিক্রেট উপাদানে তৈরি ফ্রাইড চিকেন এখনও চিকেন প্রেমীদের পছন্দের শীর্ষে। কর্নেল স্যান্ডার্স কি গোপনীয় উপাদান ব্যবহার করতেন তা নিয়ে কৌতুহল থাকলেও আজও সবার অজানা।
সম্প্রতি কেএফসিতে ব্যবহৃত মশলার একটি উপাদান জেনে যাওয়ার পরে, গ্রাহকদের মধ্যে তা নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে।
কেএফসির গোপন উপাদানগুলির মধ্যে যে উপদানটি দেখে নিউজিল্যান্ডের এক নারী গ্রাহক হতবাক হয়েছেন, ওই রাসায়নিক পর্দাথটি খাদ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৷
ওই নারী গ্রাহক 'কর্নেল স্যান্ডার্স' রেসিপি কেনটাকি ফ্রাইড চিকেন সিজনিং' লেবেলযুক্ত সিজনিংয়ের একটি প্যাকেটের ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। লেবেলটিতে দেখা যায়, উপাদানগুলিতে কেবলমাত্র চেইনের বিখ্যাত 'গোপন ভেষজ এবং মশলা' ছাড়াও বিতর্কিত লবণ মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট- এমএসজি (MSG) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট দেখে ওই গ্রাহক ক্ষুব্ধ হন এবং ফেসবুকে তা পোস্ট করেন। এরপর তার পোস্টকে ঘিরে বিশ্বখ্যাত ফুড চেইনে এই উপাদান ব্যবহার নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা শুরু হয়। মনোসোডিয়াম গ্লুটামেটের ব্যবহার ফেসবুকে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মন্তব্য করতে থাকেন। কেউ কেউ দাবি করেন, মনোসোডিয়াম গ্লুটামেটেই কেএফসির প্রধান গোপন মশলা।
আবার অনেকেই কেএফসির পক্ষ নিয়ে মন্তব্য করেন, মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট পরিমিত ব্যবহার ক্ষতিকর নয়।
প্রায় ৪০ বছর ধরে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেটের ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। কোনও গবেষণায় মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট যে মানুষের গুরুতর ক্ষতিকর বা মৃত্যু হতে পারে- এর যোগসূত্র আছে এমন বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পায়নি। তবে অনেকেই দাবি করেন, ‘এমএসজি’ যুক্ত খাবার খেলে তাদের বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, ঘাম এবং হৃৎস্পদন বেড়ে যায়। এসব প্রভাবের জন্য সারা বিশ্বে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট খাবারে কতটুকু ব্যবহার করা হবে তা নিয়ন্ত্রক সংস্থা দ্বারা নির্ধারিত হয়।
ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি কথা বলা এবং লালা গিলে ফেলতে সমস্যা হওয়ায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
চিকিৎকরা দেখেন, তার মুখ ফুলে গেছে এবং তিনি আগের রাতে ডিনারে চাইনিজ ফ্রাইড রাইস খেয়েছিলেন। এবং তাতে এমএসজি যুক্ত ছিল। ব্যক্তির সারা শরীরে ঘাম এবং চুলকানি দেখা দিয়েছিল। তবে তিনি কয়েক দিনের মধ্যে সেরে উঠেন।
এদিকে কেএফসির তরফ থেকে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেটের ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেএফসি তার ওয়েবসাইটে জানায়, তাদের কিছু খাবারে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেটের ব্যবহার করা হয়। তবে সেটা নিরাপদ মাত্রায়। যা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। এটি স্বীকৃত যে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট স্বাদ বৃদ্ধি করে। যা মাংস, মাছ, দুধ, শাকসবজি, ফল এবং পনিরের মতো খাবারেও প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায়।
ফুড স্ট্যান্ডার্ড অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে, তারা চার দশক ধরে এমএসজি নিয়ে গবেষণা করছে এবং এটি নিরাপদ।
সূত্র: ডেইলি মেইল