যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রালিয়ার একটি পরিত্যাক্ত রাজ্য পেনসিলভানিয়া। সেখানের একটি খনিতে ৫০ বছর ধরে জ্বলছে আগুন। এক সময় এখানে একটি জমজমাট খনির কেন্দ্র ছিল, কিন্তু একটি লুকানো, ভূগর্ভস্থ আগুন এটিকে ধূমায়িত ভূতের শহরে পরিণত করেছে।
এক শতাব্দী আগে, সেন্ট্রালিয়া, পেনসিলভানিয়া ছিল একটি ব্যস্ত ছোট শহর যেখানে দোকান ছিল, মানুষের বসবাস ছিল আর ছিল খনিতে কর্মরত শ্রমিকের ভিড়। স্থানীয় খনি থেকে পাওয়া কয়লা অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল। একটি খনিতে কাজ করত প্রায় ১২০০ জন শ্রমিক। এলাকাটি ছিল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।
এক সময় সেনট্রালিয়া ছিল জমজমাট কয়লা খনি। কিন্তু ১৯৬২ সালের মে মাসে খনির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এই স্থানের হাজার ফুট নিচের একটি ভাগাড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই থেকে এখনো সেই ভূগর্ভস্থ আগুন জ্বলছে। যদিও বিপরীত মন্তব্যও রয়েছে। কীভাবে আগুনের স্ফুলিঙ্গ হয়েছিল-এ প্রসঙ্গে মনে করা হয় যে সেন্ট্রালিয়া ডাম্পের আগুন শহরের নীচে একটি অনেক বড় খনি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।
১৮৯০ সাল পর্যন্ত এই স্থানে জনসংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭০০ জন। ১৯৮০ সালে তা কমে মাত্র ১ হাজার জনে নেমে আসে। মূলত, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এখান থেকে মানুষ অন্য জায়গায় চলে যেতে শুরু করে এবং এক সময় এই শহর পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। অবাঞ্ছিত গন্ধ এবং ইঁদুরে ভরে গিয়েছিল ঐ রাজ্য।
দীর্ঘদিন ধরে জ্বলতে থাকা এই আগুন নেভানোর চেষ্টা যে হয়নি তা কিন্তু নয়। তবে তা ব্যর্থ হয়েছে। আগুন নেভাতে গেলে সেখান থেকে ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হয়, যা মানুষের বসবাসের জন্য খুবই ভয়াবহ। পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে জানা গেছে, সেখানে অতিমাত্রায় কার্বন মনো অক্সাইড রয়েছে।
এই স্থান অন্য একটি কারণেও আলোচনায় এসেছিল। একবার টোড ডমবোস্কি নামের এক ১২ বছর বয়সী কিশোর সিঙ্কহোলে পড়ে গিয়েছিল। সৌভাগ্যক্রমে তাকে সেখান থেকে বাঁচায় তার কাজিন এরিক ওলফগ্যাং। এখন সেনট্রালিয়াতে মাত্র কয়েকটি ঘর-বাড়ি দেখা যায়। বেশিরভাগ পরিত্যক্ত বিল্ডিং ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ভূতত্ত্ববিদ স্টিভ জোনস বলেছিলেন , ‘এই আগুন নিভিয়ে ফেলা একটি অসম্ভব স্বপ্ন’।
সূত্র: হিস্ট্রি
 
        
      