২০ হাজার টাকায় ট্রেনে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন আল-আমিন
 প্রকাশিত: 
 ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:৪৩
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ২১:২৮
 
                                রাজধানীর কমলাপুরে নারায়ণগঞ্জ ফেরত কমিউটার ট্রেনে আগুন দেওয়ার সময় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তের নাম, আল-আমিন (২৩)। পেশায় বাসচালকের সহকারী আল আমিন বিএনপি কর্মী বলে দাবি পুলিশের। সোহাগ নামে একজন আগুন দেওয়ার জন্য আল আমিনের সঙ্গে ২০ হাজার টাকার চুক্তি করে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে কমলাপুরে ঢাকা জেলার রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা কমিউটার ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ৯ নম্বর লাইনে এসে পৌঁছায়। যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পর ট্রেনের ২০৭৫ নম্বর বগিতে যাত্রী বেশে থাকা আল আমিন ও তার আরও তিন সহযোগীর সহযোগিতায় বগির আটটি সিটের ওপর পেট্রোল ছিটিয়ে গ্যাস লাইটার দিয়ে কয়েকবার আগুন ধরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গ্যাস লাইটার ঠিকমতো কাজ করেনি। এরই মধ্যে ওই বগি থেকে নামা এক যাত্রী পুনরায় ট্রেনে উঠে দেখতে পান তারা আগুন ধরানোর চেষ্টা করছে। পরবর্তীতে ওই যাত্রী চিৎকার করলে আল আমিন ও তার তিন সহযোগী পেট্রোল ভর্তি ব্যাগ ফেলে ট্রেন থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন প্ল্যাটফর্মে থাকা যাত্রীদের সহায়তায় রেলওয়ে পুলিশ আল আমিনকে আটক করে।
পুলিশ সুপার আনোয়ার বলেন, আল-আমিন পেশায় বাস চালকের সহকারী, মাঝে মাঝে নিজেও বাস চালায়। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে। তার সঙ্গে থাকা তিনজনের মধ্যে অন্যতম ও দল নেতার নাম সোহাগ। সে একই বাসের চালক। এই সোহাগই আগুন দেওয়ার জন্য আল আমিনের সঙ্গে ২০ হাজার টাকায় চুক্তি করে।

যেভাবে আগুন দেওয়ার চুক্তি-
রেলওয়ে পুলিশের ঢাকা জেলার সুপার আরও বলেন, গতকাল দুপুরে আল আমিনকে একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে কাজের কথা বলে নারায়ণগঞ্জে তার খালার বাসায় পাঠিয়ে দেয় সোহাগ। বিকেল ৫টার দিকে ফোন করে আল-আমিনকে রাত ১০টার দিকে চাষাড়া রেল স্টেশনে আসতে বলে সোহাগ। আল আমিন রেল স্টেশনে গেলে সেখানে সোহাগসহ তিনজনের সঙ্গে ট্রেনে ওঠে। এ সময় সোহাগের কাঁধে একটি কালো ব্যাগ ছিল।
যাত্রীরা নেমে গেলে আল আমিন পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরাবে এমন পরিকল্পনা ছিল। বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ট্রেনটি কমলাপুর আসার পর সব যাত্রী নেমে গেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী কয়েকবার আগুন ধরানোর চেষ্টা করে আল আমিন। কিন্তু গ্যাস লাইটার ঠিক মতো কাজ না করায় আগুন ধরাতে পারেনি। এরই মধ্যে মধ্যে এক যাত্রী চলে আসায় তারা পালানোর চেষ্টা করে।
গ্রেপ্তার আল আমিন পুলিশকে জানিয়েছে, সে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকে। পাশাপাশি বাস দিয়ে নেতা-কর্মীদের আনা-নেওয়ার দায়িত্ব পালন করে। সোহাগও একইভাবে কাজ করত। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
কমলাপুরে থাকা ভাসমান মানুষদের ওপর নজরদারির আছে কি না জানতে চাইলে পুলিশ সুপার আনোয়ার বলেন, রেলস্টেশন কেন্দ্রিক কিছু মানুষ থাকে। যাদের বাবা-মা ও পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। আমরা চেষ্টা করি ভাসমান শিশু-কিশোরদের পরিবারে ফিরিয়ে দিতে। পাশাপাশি যাদের পরিবার পাওয়া যায় না তাদের বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে ভালো একটি নিরাপদ আবাসস্থল করে দেওয়ার চেষ্টা করি। কাউন্সিল করা হয়, কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।
বিশেষ করে হরতাল অবরোধের সময়ে এই সকল শিশু কিশোরদের সঙ্গে কথা বলি। তাদের নজরে রাখা হয় যেন তারা বিপথগামী না হয়। বা কেউ টাকার বিনিময়ে হরতাল-অবরোধে নাশকতার কাজে ব্যবহার না করতে পারে।
পুলিশ সুপার আনোয়ার বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরের ঘোষণা অনুযায়ী নাশকতাকারীকে গ্রেপ্তারের সাহায্য করায় ওই যাত্রীকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
তবে ওই যাত্রীর নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি রেলওয়ে পুলিশ।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: