শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪, ২০শে আষাঢ় ১৪৩১


আইনের দুর্বলতায় সিগারেট কোম্পানিগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠছে


প্রকাশিত:
২ জুলাই ২০২৪ ২০:২১

আপডেট:
৫ জুলাই ২০২৪ ০০:০০

ছবি : মামুন রশিদ

বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতায় সিগারেট কোম্পানিগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিধিবিধান বাস্তবায়নে সচেতনভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে তারা। কোম্পানিগুলোর মূল উদ্দেশ্য তরুণদের ধূমপানে আকৃষ্ট করে দীর্ঘমেয়াদী ভোক্তা তৈরি করা।

তামাক নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, তরুণদের রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে দ্রুত সংশোধন করে শক্তিশালী করা জরুরি। পাশাপাশি এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ অনুসারে তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিসমূহ সুরক্ষায় 'কোড অব কন্ডাক্ট' বা তামাক কোম্পানির সঙ্গে অসহযোগিতার নীতি গ্রহণ করতে হবে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ : অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ৪ গণমাধ্যমকর্মীর প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সেখান থেকে এসব কথা জানা যায়। গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি, নাটাব, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সহায়তায় এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে দৈনিক ভোরের কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার সেবিকা দেবনাথ বলেন, নিজেদের ব্যবসার প্রসারে তামাক কোম্পানিগুলো সু-কৌশলে গণমাধ্যমকেও ব্যবহার করছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করে ক্যাম্পেইন, গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন, গবেষণা ও রিপোর্ট প্রচারে আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি তামাক বিরোধী প্রতিবেদন/সংবাদ প্রচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।

ঢাকা পোস্টের গবেষণা এবং সম্পাদনা বিভাগের প্রধান বিনয় দত্ত বলেন, স্থানীয় সরকার গাইড লাইন অনুসারে নিষিদ্ধ সত্ত্বেও বিদ্যালয়ের ১০০ মিটারের মধ্যে অবাধে বিক্রি হচ্ছে সিগারেট এবং সেখানে মূল ভোক্তা শিক্ষার্থীরা। তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক বিধিবিধান থাকলেও কার্যকর করার জন্য যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় বিদ্যালয়ের কর্মকর্তারাও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ওয়াকিবহাল নন। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে তামাক কোম্পানির সহজ বিচরণ ১৮ বছরের নিচে শিক্ষার্থীদের মনস্তত্ত্বে জায়গা করে নিচ্ছে।

ওয়েবসিরিজগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত ধূমপান দৃশ্য দেখানোর পাশাপাশি তরুণদের ধূমপানে উৎসাহিত করার মতো ডায়ালগ থাকার বিষয়টি উঠে আসে। ওটিটিকে সেন্সরিংয়ের আওতায় আনাসহ ধূমপান দৃশ্যের ক্ষেত্রে মনিটরিং এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে ওটিটি প্লাটফর্মকেও সংযুক্ত করা উচিত।

দৈনিক কালবেলার স্টাফ রিপোর্টার দেলাওয়ার হোসাইন দোলন বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো মোটা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করছে। মূলত এসব প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য থাকে তরুণদের মাঝে তামাক পণ্যের প্রচার। সেখানে সহযোগী হয়ে কোম্পানির স্বার্থে কাজ করছে নামিদামি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ বা অনুষদ। এছাড়া তরুণদের আকৃষ্ট করতে তামাক কোম্পানিগুলো বিখ্যাত শিল্পীদের এনে কনসার্ট আয়োজন করছে। অনুষ্ঠানস্থল তামাক পণ্যের ব্র্যান্ড কালার এবং লোগোসমৃদ্ধ বিজ্ঞাপন দিয়ে সাজানো হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন শক্তিশালী করা এবং নিয়মিত তামাক কোম্পানির কার্যক্রম মনিটরিং করা জরুরি।

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের দপ্তর সম্পাদক সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ নাসির উদ্দীন শেখ এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top