বৃহঃস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১


রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া শান্ত


প্রকাশিত:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৯

আপডেট:
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৫৯

ছবি সংগৃহিত

সাভারের আশুলিয়ায় টানা ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে পোশাক খাতে শ্রমিকদের অসন্তোষের জেরে আজ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটেছে। তবে উত্তাল শিল্পাঞ্চলে সকাল থেকেই চলমান সংঘর্ষে রোকেয়া বেগম নামে এক নারী পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে আজ ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় পোশাক কারখানার অন্তত অর্ধশতাধিক পোশাক শ্রমিক আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ৪টার দিকে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান।

নিহত রোকেয়া বেগম ম্যাসকট পোশাক কারখানার ফিনিশিং শাখার সহকারী সেলাই মেশিন অপারেটর পদে চাকরি করতেন। সে গাইবান্ধা জেলার সদর থানার গুদারহাট এলাকার মাসুদ রানার স্ত্রী।

আহত শ্রমিকরা বলেন, গতকাল (সোমবার) বন্ধের পরে আজ (মঙ্গলবার) সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। তবে ম্যাসকট নামে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এসে দেখেন ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ রয়েছে। এ সময় শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পাশে সাউদার্ন ও রেড়িয়েন্স পোশাক কারখানায় ইটপাটকেল ছোড়েন। পরে ওই দুই পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেড়িয়ে এসে তাদেরও ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে কিছু সময়ের মধ্যেই ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় রোকেয়া নামে একজন পোশাক শ্রমিক আহত হলে জিরাবো পিএমকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়াও তিনটি পোশাক কারখানার অন্তত অর্ধশতাধিক পোশাক শ্রমিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান শ্রমিকরা।

এনাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শ্রমিক নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা হঠাৎ ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় আমরা কারখানা থেকে বেড়িয়ে আসলে কয়েক শতাধিক অন্য পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ইট ছোড়ে। এতে আমি আহত হয়েছি। পরে আমাকে চিকিৎসার জন্য এনাম মেডিকেলে নিয়ে আসে।

সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ এজাজ বলেন, সকাল থেকে সাউদার্নসহ কয়েকটি পোশাক কারখানার অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক এসে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান তিনি।

এ ছাড়া আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালের অপারেশন ম্যানেজার হারুন-অর-রশিদ বলেন, রেড়িয়েন্স পোশাক কারখানার ৯ জন পোশাক শ্রমিক হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছে।

শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টার কাওসার বলেন, শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায় মরদেহ পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক টেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, সকালে আশুলিয়ার জিবারো এলাকায় শ্রমিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া শিল্পাঞ্চলের পল্লীবিদ্যুৎ, বাইপাইল, জামগড়া, ডিইপিজেড এলাকায় শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক কাজ চলছে। তবে জিরাবো এলাকায় দুপুরে সব পোশাক কারখানায় ছুটি দেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, সকালে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে অন্য পোশাক কারখানায় ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং এক নারী নিহত হন। তবে দুপুরের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শিল্প পুলিশ, পুলিশ ও সেনা বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top