যাদের ট্যাক্স বকেয়া তারা আর কোনো ছাড় পাবেন না : ডিএনসিসি প্রশাসক
 প্রকাশিত: 
 ১১ মে ২০২৫ ১২:২০
 আপডেট:
 ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৩৭
 
                                ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, প্রভাবশালী যারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ট্যাক্স দেন না, যাদের কাছে অনেক বকেয়া তারা এবার আর কোনো ছাড় পাবেন না। স্বপ্রণোদিত হয়ে ট্যাক্স প্রদান করেন না হলে সিটি করপোরেশনের লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়া বিরক্ত করবে ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
রোববার (১১ মে) মহাখালীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পৌরকর মেলা ২০২৫ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, সাধারণ মানুষ কর দিতে চায় কিন্তু মানুষের ভ্রান্ত ধারণা আছে কর দেওয়ার প্রক্রিয়া জটিল তাই তারা কর দিতে আসে না। এবার আমরা এই সমস্যার সমাধান করেছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পৌরকর অনলাইনে প্রদান প্রক্রিয়া সহজিকরণ করা হয়েছে। ঘরে বসেই কর প্রদান করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ডিএনসিসির অঞ্চলগুলোতে গণশুনানি করে দেখেছি নাগরিকদের রাস্তা, ড্রেনেজ ও সড়কবাতির চাহিদা অনেক সে অনুপাতে রাজস্ব আদায় নেই। রাজস্ব আদায় না হওয়ায় কারণ হিসেবে তিনটি বিষয় চিহ্নিত করেছি। ডিএনসিসির নতুন সংযুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের বেশিরভাগ এলাকায় কর তালিকার অন্তর্ভুক্ত নেই, আবাসিক এলাকাগুলোতেও বাণিজ্যিক ব্যবহার হচ্ছে সেখান থেকে আমরা কোনো রাজস্ব পাচ্ছি না, নতুন করে হওয়া প্রচুর দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে কর প্রদানের তালিকার আওতায় আনতে হবে।
এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যারা কর দেয় বা যারা কর দেয় না সবাইকেই সিটি করপোরেশনের নাগরিক সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। আমাদের জনবল সংকট রয়েছে স্থায়ী লোকবল নিয়োগ করতে গেলে সেখানে তাদের বেতন ভাতা দিতে রাজস্ব ব্যয় হচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়নে রাজস্বের বড় অংশ ব্যয় হয়। এই ব্যয়কে মাথায় রেখে কর আদায়ের লক্ষ্য পূরণ ও পৌরকর প্রদান সহজিকরণ করতে এই পৌরকর মেলার আয়োজন।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি ডিএনসিসির এমন কিছু জায়গা আছে যেগুলো থেকে কর আদায় করা গেলে আমাদের উন্নয়ন ব্যয় এর চেয়ে আদায় বেশি হতো। উদাহরণস্বরূপ তিনি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কথা বলেন। বসুন্ধরা সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি তারা ট্যাক্স দিতে রাজি হয়েছেন।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের আমরা গণশুনানির মাধ্যমে তাদের কর প্রদান উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছি। মেলায় এসে কর দিলে তারা সুযোগ সুবিধা পাবে এবং এক টেবিলে বসে তাদের সব সমস্যা সমাধান করতে পারবে। তারাও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
ডিএনসিসি প্রশাসক আক্ষেপ করে বলেন, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে কর প্রদান করে না। ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে প্রায় ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা ট্যাক্স বকেয়া পরে আছে। তেমনি রেনেসাঁস হোটেল, ওয়েস্টিন হোটেল ও বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেও এমন পরিমাণ ট্যাক্স বকেয়া আছে। তারা সিটি করপোরেশন থেকে সর্বোচ্চ গ্রহণ করে অথচ ট্যাক্স প্রদান করে না এটা অনৈতিক।
তিনি আরও বলেন, কর তালিকা থাকা এমন ব্যক্তিদের মধ্যে ন্যূনতম এক লাখ টাকা কর বকেয়া আছে প্রায় ২৫ হাজার লোকের কাছে। কর তালিকার বাইরে আছে এর প্রায় পাঁচ গুণের ও বেশি। মেলা পরবর্তী সময়ে আমরা কর তালিকায় সব নাগরিকদের আনার জন্য এসেসমেন্টের জন্য লোক পাঠানো হবে। তাই, নাগরিকদের কাছে অনুরোধ আপনারা নিজেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে কর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে পৌর কর প্রদান করেন। মেলায় আমরা ৭.৫ শতাংশ রিবেটের ব্যবস্থা রেখেছি। কোনো হয়রানি যেন না, সেজন্য অনলাইন পোর্টাল খোলা রাখা হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স যেমন ঘরে বসে পাচ্ছেন তেমনি হোল্ডিং ট্যাক্সও ঘরে বসে দেওয়া যাবে।
প্রশাসক বলেন, নাগরিকদের কর দেওয়া দেশের প্রতি তাদের কর্তব্য। তাই সবাই কর প্রদান করুন। যাদের কাছে বেশি কর বকেয়া তাদের অতি শিগগিরই ক্রোকের নোটিশ প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, ঢাকাকে যদি আমার পরিবর্তন করতে চাই তাহলে সিটি করপোরেশনকে স্বাবলম্বী হতে হবে। অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হলে সিটি করপোরেশন যেমন ২৪ ঘণ্টা আপনাদের পাশে আছে তেমনি আপনাদেরও ট্যাক্স দিয়ে আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ প্রমুখ।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: