শুক্রবার, ১১ই এপ্রিল ২০২৫, ২৮শে চৈত্র ১৪৩১


ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে নারী চিকিৎসকের সঙ্গে প্রেম


প্রকাশিত:
১ জানুয়ারী ২০২৫ ১৭:৫৫

আপডেট:
১১ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:২৭

ছবি সংগৃহিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থেকে পড়াশোনা শেষ করে ম্যাজিস্ট্রেট হয়েছেন বলে পরিচয় দিয়ে প্রথমে নারী চিকিৎসকের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক করেন তানজিম খান তাজ ওরফে নীরব (৩০)। এরপর তা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। দুজনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করে মেয়ের পরিবার। এরপর চিকিৎসা করিয়ে পুনরায় প্রেমের সম্পর্ক গড়তে প্রেমিকাকে অপহরণ করেন নীরব।

বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে র‌্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রাত ৮টার দিকে পাবনা শহরের মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে ওই নারী চিকিৎসককে উদ্ধার করা হয়।

এর আগে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বাবাসহ ওই চিকিৎসককে অপহরণ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাঁথিয়ার বামনডাঙ্গা গ্রামের আবু হানিফ কাজীর ছেলে তানজিম খান তাজ ওরফে নীরব (৩০), সুজানগরের চর গোবিন্দপুর গ্রামের শহীদ মল্লিকের ছেলে সেলিম মল্লিক (৩৫), সিরাজগঞ্জের চৌহালির রড়ংগাইলের সোলায়মানের ছেলে মো. সজিব হোসেন (২৩) ও সুজানগরের বদনপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন মিয়ার ছেলে মাইক্রোবাস চালক মো. আশরাফুল ইসলাম (৩৫)।

অপহৃত চিকিৎসক রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ থেকে সম্প্রতি ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) শেষ করেছেন। তার বাবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি পরিবার নিয়ে নগরীর চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় থাকেন। সোমবার ভোরে ওই বাসা থেকেই বাবা-মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই চিকিৎসকের বাবাকে পথে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় ফেলে রাখেন অপহরণকারীরা।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহীর একটি বাসা থেকে ওই নারী চিকিৎসককে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করেন কয়েকজন যুবক। এরপর বিষয়টি নিয়ে সারাদেশে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় অপহরণ মামলা করেন। এরপর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে পাবনা শহরের মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এরপর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান আসামি তানজিম খান তাজ ওরফে নীরব জানিয়েছেন, রাজশাহীতে থাকা অবস্থায় প্রেমের সম্পর্কর মাধ্যমে কয়েক বছর পূর্বে তাদের বিয়ে হয়। এরপর এই সম্পর্ক ছিন্ন করতে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করায় পরিবার। ঝাড়ফুঁক করিয়ে তাকে অসুস্থ করে ফেলা হয়। তাকে সুস্থ করতে চিকিৎসা প্রয়োজন বলে অপহরণ করা হয়। এরপর যাতে তার সঙ্গে পুনরায় সম্পর্ক গড়া যায়।

তবে বিয়ের কাবিননামা ভুয়া বলে দাবি করেছেন ওই নারী চিকিৎসক। তিনি জানিয়েছেন, রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করা অবস্থায় নীবর ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রথমে তিনি জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ম্যাজিস্ট্রেট হয়েছেন। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পড়াশোনা করেননি।

র‌্যাব আরও জানায়, মেয়েটির সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলেন নীরব। এছাড়াও বহু মেয়ের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্কের তথ্য পাওয়া গেছে। অনেকের থেকে বিভিন্ন সময়ে টাকা নিয়ে ৮৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।

র‌্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, নারী চিকিৎসককে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজশাহীর থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখান থেকে আদালতের মাধ্যমে তাকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top