সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে, চলছে সর্বশেষ তল্লাশি
প্রকাশিত:
২৫ মার্চ ২০২৫ ১১:২১
আপডেট:
২৬ মার্চ ২০২৫ ০২:২২

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশন-সংলগ্ন শাপলার বিল-তেইশের ছিলা এলাকার আগুন সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এরপর বন বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবকরা আগুন লাগা স্থান তেইশের ছিলা-শাপলার বিল এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছেন। পুরো এলাকা তল্লাশি করে দেখা হবে, ঘটনাস্থল ও আশপাশের কোথাও আগুনের কুণ্ডলী বা ধোয়া রয়েছে কিনা। নিচ থেকে মনুষ্য চোখে পর্যবেক্ষণ শেষে ওড়ানো হবে বন বিভাগের ড্রোন। ড্রোন ক্যামেরায় আরও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে অন্য কোথাও আগুনের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা। যদি কোথাও আগুনের অস্তিত্ব না থাকে তাহলে দাপ্তরিকভাবে সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণ হয়েছে বলে ঘোষণা দেবে বন বিভাগ।
রাতভর আগুন নির্বাপণের কাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স খুলনা কার্যালয়ের সিনিয়র স্টেশন অফিসার সমা আরিফুল হক বলেন, রাতে জোয়ার আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা পানি ছিটানো শুরু করি। রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পানি ছিটিয়েছি। আমরা খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি, বনের কোথাও আগুনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এখনো আমাদের বনের ভেতরে রয়েছে, তারা সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ করছেন। বন বিভাগের লোকজনও পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। যদি আগুনের অস্তিত্ব না পাওয়া যায়, তাহলে বন বিভাগের পক্ষ থেকে আগুন নির্বাপণ হয়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হবে।
ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর রায় বলেন, রাতভর আমরা সবাই মিলে কাজ করেছি। এখন সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ চলছে। জোয়ার আসার পর ৯টার দিকে আবারও পাম্প চালানো হয়েছে। এখনো কোথাও আগুনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আশাকরি অগ্নিনির্বাপণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে আমরা তল্লাশি চালাচ্ছি, সর্বশেষ ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে তল্লাশি করা হবে।
এর আগে, গেল শনিবার সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী বন টহল ফাঁড়ির টেপার বিলে আগুন লাগে। রোববার সকালে সেই আগুন নেভানো হয়। সুপ্ত আগুন ও ধোয়ার কুণ্ডলী খুঁজতে বন বিভাগ ড্রোন ব্যবহার করে। তখন কলমতেজী এলাকা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা-শাপলার বিলে আগুনের অস্তিত দেখতে পায় বন বিভাগ।
তাৎক্ষণিকভাবে বন বিভাগ, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক, ভিটিআরটি, সিপিজি সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে যাতে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য ফায়ার লাইন তৈরি করেন তারা। আগুনের স্থল থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ভোলা নদীতে পাম্প বসিয়ে, এদিন রাতেই পানি ছিটানো শুরু করে ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগ। তবে ভোলা নদীতে পানি কম থাকা এবং ভাটার সময় শুকিয়ে যাওয়ায় নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি ছেটাতে পারেনি ফায়ার ফাইটাররা। যার কারণে সোমবারও রাতভর কাজ করতে হয় বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। এরপর সোমবার সকাল থেকে আবারও অগ্নিনির্বাপণ কাজ শুরু হয়। রাতেও চলে আগুন নেভানোর কাজ। এখন চলছে সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ।
আগুন বনের কতটা এলাকায় ছড়িয়েছে এবং আগুনের উৎসের সে বিষয়ে বন বিভাগের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও, স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শাপলার বিল ও কলমতেজী এলাকার প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: