বুধবার, ১৬ই এপ্রিল ২০২৫, ২রা বৈশাখ ১৪৩২


মাদারীপুরে ধারাবাহিক সংঘর্ষস্থলে ১৪৪ ধারা জারি


প্রকাশিত:
১৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৫২

আপডেট:
১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০০:৫২

ছবি সংগৃহীত

মাদারীপুরের রাজৈরে ধারাবাহিকভাবে চলে আসা সংঘর্ষস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে একটি লিখিত আদেশে রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহফুজুল হক ১৪৪ ধারা জারি করেন।

আদেশে বলা হয়, প্রায় ৭ দিন যাবত রাজৈর বাজার সংলগ্ন পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশা গ্রামের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিয়মিত বিরতিতে দেশীয় অস্ত্রসহ মারামারি, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও অস্ত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন দাঙ্গা হাঙ্গামা চলছে। এ সকল আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টকারী ঘটনা বন্ধে এবং শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রয়োজনে ফৌজদারী কার্যবিধি মতে ১৪৪ ধারা জাবি করা হলো। এ মোতাবেক রাজৈর বাজার, পশ্চিম রাজৈর, বদরপাশা এবং গোপালগঞ্জ এলাকায় এক বা একাধিক ব্যক্তি চলাফেরা, সভা-সমাবেশ, শোভাযাত্রা, মাইকের ব্যবহার, লাঠিসোঁটা বা যে কোনো প্রকারের আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ১টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত এই ১২ ঘণ্টা এ আদেশ বহাল থাকবে। তবে দায়িত্ব পালনরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জরুরি সেবা প্রদানে নিয়োজিতদের ক্ষেত্রে এ আদেশ শিথিল থাকবে বলে লিখিত আদেশে জানানো হয়।

এ ব্যাপারে রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহফুজুল হক বলেন, যে কোনো সময় আবার দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এজন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ আইন লঙ্ঘন করার চেষ্টা করে তাহলে ১৪৪ ধারা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে দুই দিন যাবত বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ চলে আসছিল। এ সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। রোববার (১৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার সময় চতুর্থ ধাপের সংঘর্ষ শেষে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিটিং করছিল পশ্চিম রাজৈর পক্ষ নেওয়া মজুমদার কান্দি গ্রামের লোকজন। খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের দুটি গাড়ির ওপর ইটপাটকেল নিয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনায় রাজৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা ও পুলিশের গাড়ির ড্রাইভার শাহাবুদ্দিনের মাথা ফেটে গুরুতর আহত হয়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এর আগে রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের দুই পক্ষের লোকজনকে ডেকে মীমাংসার জন্য রাজি করান রাজৈর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওহাব আলী মিয়াসহ স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার সময় সালিস মীমাংসার জন্য বসার কথা ছিল। এরই মধ্যে রোববার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের লোকজন উস্কানিমূলক কথাবার্তায় উত্তেজিত হয়ে আবারও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় বদরপাশা গ্রামের লোকজন বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ১২টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে বদরপাশা গ্রামের বিক্ষুব্ধরা। একপর্যায়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে রাজৈর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ঘটনাস্থালে র‍্যাব মোতায়েন করা হয়।

দ্বিতীয় দিনের এ ঘটনায় মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অর্ধশত লোকজন আহত হন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top