বুধবার, ১৮ই জুন ২০২৫, ৪ঠা আষাঢ় ১৪৩২


নারী শ্রমিককে ভারতে পাচার করে বিক্রি, সহকর্মী দুই নারীর যাবজ্জীবন


প্রকাশিত:
১৮ জুন ২০২৫ ১৮:৩৭

আপডেট:
১৮ জুন ২০২৫ ২৩:৪০

ছবি সংগৃহীত

ফরিদপুরে এক নারী পাটকল শ্রমিককে সুন্দরবনে ভ্রমণের প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার ও বিক্রির ঘটনায় দুই নারী সহকর্মীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

বুধবার (১৮ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীমা পারভীন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

সাজাপ্রাপ্ত দুই নারী হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বৈশাখালী গ্রামের আমীর আলী মোল্লার মেয়ে মাকসুদা বিবি (৪৮) ও একই উপজেলার আটিরোপর এলাকার মতিয়ার পালের মেয়ে মর্জিনা ওরফে সোনালী (৩৮)।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৯ মে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মানবপাচার আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী তরুণীর মা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কানাইপুর করিম জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন বাদী, তার দুই মেয়ে এবং আসামি মাকসুদা বিবি একই মালিকের বাসায় ভাড়াটিয়া ছিলেন। ফলে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই সুযোগে ২০১২ সালের ৮ মে মাকসুদা ‘গ্রামে বেড়াতে’ এবং ‘সুন্দরবন দেখাতে’ চেয়ে ওই তাকে নিয়ে যান। পরে তাকে পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিছু দিন পর একটি ভারতীয় নম্বর থেকে ফোনে জানানো হয়— তার মেয়েকে কলকাতায় বিক্রি করা হয়েছে।

কলকাতা থেকে উদ্ধার, ফিরে আসা বাংলাদেশে

১৮ মে কলকাতার এক যৌনপল্লিতে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করে। পরে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী পরিষদের সহায়তায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এ সময় ফরিদপুর ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী শামসুন্নাহার নাইম আইনি সহায়তা দেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, শুধু মাকসুদা নন, একই চক্রের সদস্য মর্জিনা ওরফে সোনালীও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবুল খায়ের।

রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া বলেন, মোট সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় দিয়েছেন। মানবপাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধ কেউ করলেই শাস্তি পাবে— এই রায়ে তা স্পষ্ট হয়েছে।

ফাঁসি না হওয়ায় হতাশ ভুক্তভোগী পরিবার

রায়ে আনন্দের পাশাপাশি হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলার পক্ষে আইনি সহায়তা দেওয়া মহিলা আইনজীবী পরিষদের সদস্য শামসুন্নাহার নাইম। তিনি বলেন, জড়িতরা সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের সদস্য। তারা বিভিন্ন মিল-কারখানায় কাজ করে নারী শ্রমিকদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে এবং পরে পাচার করে দেয়। ভুক্তভোগী মেয়েটির এখনো বিয়ে হয়নি। আমরা চেয়েছিলাম এই জঘন্য অপরাধের শাস্তি হোক মৃত্যুদণ্ড। তাহলে সমাজে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হতো।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top