টানা বৃষ্টিতে তলিয়েছে বিস্তৃর্ণ এলাকা, পানিবন্দী ৫ হাজার মানুষ
প্রকাশিত:
২ আগস্ট ২০২৫ ১৩:৫২
আপডেট:
২ আগস্ট ২০২৫ ২২:৩১

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের পানিতে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন গ্রাম। এতে পানিবন্দী হয়ে হয়েছে প্রায় ৫ হাজার মানুষ।
যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার হিজেলডাঙ্গা ও ভবানীপুর এলাকার উজানের পানির প্রবাহের কারণে তালার শিরাশুনি গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম এ দৃশ্য দেখা গেছে। প্লাবিত হওয়া এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট, বেড়েছে পানিবাহিত রোগ। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শত শত মানুষ।
শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, কেশবপুর এলাকার উজানের দিক থেকে পানি প্রবাহিত হয়ে তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শিরাশুনি গ্রামে প্রবেশ করছে। গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ি জলমগ্ন। রাস্তাঘাট, কৃষি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবই তলিয়ে গেছে পানির নিচে। এতে এসব এলাকার বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
শিরাশুনি গ্রামের জালাল উদ্দিন বলেন, অতিবৃষ্টির সঙ্গে উজান পানি মিলিয়ে হঠাৎ করেই আমাদের গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে। রান্নাবান্না, কৃষিকাজ, শিশুদের পড়াশোনা—সব কিছুতেই ভোগান্তি। কৃষিকাজ বন্ধ, কাজ নেই, ঘর থেকেও বের হতে পারি না। গত তিন বছর ধরে এই পানি আমাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
ময়না খাতুন নামের এক গৃহবধু বলেন, আমাদের বাড়িতে কোমর সমান পানি। কেউ মারা গেলে কবরস্থানে নেওয়াও সম্ভব হবে না। বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেকেই চর্মরোগ ও অন্যান্য পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
তালা উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান জানান, গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসনের পরিকল্পনা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। কেশবপুরের নরনিয়া খাল দিয়ে পানি নামতে না পারায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইতোমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পানির গতি বাড়াতে বিভিন্ন খালের মুখে থাকা নেটপাটা ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে। তবে কেশবপুরের উজান থেকে পানি সরানো না গেলে আশপাশের আরও ১০টি গ্রাম স্থায়ী জলাবদ্ধতায় পড়তে পারে।
তিনি আরও বলেন, নওয়াপাড়া খাল দিয়ে কিছুটা পানি সরানো গেলেও নরনিয়া খাল ও ভদ্রা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বড় বাধা সৃষ্টি হয়েছে। কেশবপুর ও মনিরামপুরের পানি ভদ্রা নদী দিয়ে না নামায় আমাদের এলাকায় জলাবদ্ধতা হচ্ছে। ভদ্রা নদী খনন করলেই স্থায়ী সমাধান সম্ভব।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপা রানী সরকার বলেন, উপজেলার অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। ইতোমধ্যে কয়েকটি খালের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে। আমি নিজেও একাধিকবার এলাকা পরিদর্শন করেছি। শুক্রবার বিকেলেও শিরাশুনি এলাকায় গিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছি। পানি অপসারণে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: