মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে নেত্রকোণা-সিধলী সড়কটি
প্রকাশিত:
৩১ আগস্ট ২০২৫ ১২:৫৩
আপডেট:
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:২৫

দীর্ঘদিন যাবত চলাচলের অনুপযোগী নেত্রকোণা-সিধলী-কলমাকান্দা সড়ক। জেলা শহরের রাজুর বাজার থেকে সিধলী পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। পাশাপাশি যাতায়াতে দুর্ভোগের মাত্রা পৌঁছেছে চরমে।
নেত্রকোণা জেলা শহর থেকে সিধলী বাজার পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার রাস্তা। সড়কের ২ কিলোমিটার সংস্কার করা হলেও বাকি প্রায় ১৩ কিলোমিটার ভেঙে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিগত ৪ বছর ধরে রাস্তাটির বিভিন্ন অংশ ভাঙতে ভাঙতে বর্তমানে এটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের বিভিন্নস্থানে বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
এছাড়া সড়কটির বেশিরভাগ স্থানে পিচ সুড়কি উঠে পরিণত হয়েছে মাটির রাস্তায়। প্রায়শ গর্তে পড়ে আটকে যাচ্ছে বিভিন্ন যানবাহন, ফলে তৈরি হচ্ছে যানজট। সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে বয়স্ক, শিশু, গর্ভবতী ও অসুস্থদের। এই সড়কে চলতে গিয়ে গাড়ি উল্টে বা ইঞ্জিন বিকল হয়ে প্রায়শই ক্ষতি হয় বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক, চালক ও স্থানীয়রা।
বালুবাহী একটি ট্রাক্টরের চালক মাসুদ মিয়া বলেন, এই রাস্তাটার অনেকদিন ধরেই খারাপ অবস্থা। রাস্তাটা ঠিক হওয়ার কোনো বন্দোবস্তু দেখতেছি না। আপনারা তো দেখতেছেন কি অবস্থা। আমার গাড়িটা বালু নিয়ে যাওয়ার সময় এখানে আটকে গেছে। এখন বালু নামিয়ে গাড়ি উঠানোর পর এখানে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. হযরত আলী বলেন, আমরা ব্যবসার কাজে যাতায়াতের কোনো সুযোগ সুবিধা পাই না। ধরেন ডেলিভারী রোগী হাসপাতালে যাওয়ার জন্য জরুরি একটা গাড়ি প্রয়োজন, সেটা পাই না রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে।
সিধলী বাজারের ব্যবসায়ী মো. শহীদ মিয়া জানান, আমাদের এই বাজারের রাস্তায় পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। যার কারণে এখানে সবসময়ই পানি জমে থাকে। একে তো রাস্তা ভাঙা, আবার পানি জমে থাকার কারণে এখানে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটে। কয়েকদিন আগে নতুন জামাই-বউ নিয়ে একটি অটোরিকশা যাওয়ার সময় এখানে উল্টে গিয়ে গাড়িতে থাকা সবাই ব্যথা পেয়েছে। আমরা নিজের উদ্যোগে বালু-সুড়কি দিয়ে গর্ত ভরাট করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পানি হলে কিছুই থাকে না।
সড়কটির বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে এলজিইডি নেত্রকোণার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সিধলী রাস্তাটি আমাদের উপজেলা সড়ক। আমাদের এ রাস্তার টোটাল দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১৩ কিলোমিটারের একটু বেশি। এই রাস্তাটি আমাদের আরসিআইপি (রুরাল কানেকটিভিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট) প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত আছে। এ রাস্তার কাজটি ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এটা ফরেন ফান্ড। এটা ডোনারদের সঙ্গে এগ্রিমেন্ট হতে একটু সময় লাগছে। আমরা আশা করছি কাজটি ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে ১৮ ফুট চওড়া করে সপন্ন হবে।
তিনি আরও বলেন, এ রাস্তাটির যেখানে যেখানে চলাচলের অযোগ্য হয়, সেখানে আমরা লোকালি অফিসিয়ালি চলাচল সচল রাখার চেষ্টা করছি। তাছাড়া আরেকটি প্রকল্পে আমি এ রাস্তাটির জন্য প্রস্তাব করে রেখেছি। প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা যদি আরসিআইপি প্রকল্পে না পারি, তাহলে আমরা জিওবি প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তার কাজটি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: