ভয় দেখিয়ে সাবেক স্ত্রীকে রাত্রিযাপনে বাধ্য করায় খুন হন দুলাল
প্রকাশিত:
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৩০
আপডেট:
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:২৬

ডিভোর্সের পরও ভয়ভীতি দেখিয়ে সাবেক স্ত্রীকে রাত্রিযাপনে বাধ্য করতেন কুমিল্লার লালমাইয়ের দুলাল হোসেন (৩৫)। এই অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ পেতে বর্তমান স্বামী ও মা-বাবাকে নিয়ে সাবেক স্বামীকে হত্যা করেন ফাতেমা আক্তার সিনথিয়া নামের এক নারী।
একইসঙ্গে হত্যার পর লাশ গুম করতে ফেলে রাখেন রেললাইনের পাশে। এ ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা লালমাই উপজেলার পেরুল এলাকায় রেললাইনের পাশ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে লাকসাম রেলওয়ে পুলিশ। নিহত যুবকের মাথার ডান পাশে রক্তাক্ত জখম ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। পরে যুবকের পরিচয় শনাক্ত হয়। তিনি কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার ভল্লবপুর গ্রামের জব্বর মালের ছেলে দুলাল হোসেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, র্যাব-১১ এর একটি চৌকস অভিযানিক দল নিজস্ব গোয়েন্দা নজরদারি ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ১৫ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার ও লাকসাম থানা এবং ঢাকা জেলার যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের ভাষ্যমতে জানা যায়, গ্রেপ্তার আসামি ফাতেমা আক্তার সিনথিয়ার সঙ্গে প্রায় ৬ মাস আগে নিহত দুলালের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তারা নিমসার বাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে দুলাল সিনথিয়াকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এরই মধ্যে ফাতেমা আক্তার সিনথিয়া গ্রেপ্তার আরেক আসামি দুবাই প্রবাসী আবুল হাসেমের সঙ্গে ইমোর মাধ্যমে পরিচিত হন এবং পরিচয়ের একপর্যায়ে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরে স্বামী দুলালকে ডিভোর্স দিয়ে মায়ের বাড়িতে চলে যান। এর মধ্যে প্রবাসী আবুল হাসেম দুই মাস আগে দেশে এলে এর ৩-৪ দিনের মধ্যে সিনথিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়। কিন্তু দুলাল ডিভোর্স না মেনে প্রায় সময়ই হাসেমের অনুপস্থিতিতে জোরপূর্বক বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে সিনথিয়ার বাসায় গিয়ে রাত্রিযাপন করতেন। প্রথমে বিষয়টি সিনথিয়া গোপন করলেও পরে বাধ্য হয়ে বর্তমান স্বামী হাসেমকে জানান। এরপর সিনথিয়া, তার বর্তমান স্বামী হাসেম, সিনথিয়ার বাবা-মা মিলে দুলালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ঘটনার দিন নিহত দুলাল সিনথিয়ার বাসায় যান ও সিনথিয়া তার বর্তমান স্বামী হাসেমের কথামতো জুসের সঙ্গে চারটি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে গ্রেপ্তার আসামিরা দুলালের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে লাশ গুম করার জন্য গ্রেপ্তার আরেক আসামি ড্রাইভার রুবেল নোহা গাড়ি নিয়ে লাশ লালমাই রেললাইনের পাশে রেখে আসে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: