১৫ লাখ অনলাইন রিটার্নের ১০ লাখ করদাতারই শূন্য কর
প্রকাশিত:
২৪ মার্চ ২০২৫ ১৫:০৮
আপডেট:
২৬ মার্চ ২০২৫ ০২:১৮

চলতি করবর্ষে অনলাইন রিটার্নের মধ্যে ৬৬ শতাংশই শূন্য রিটার্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
সোমবার (২৪ মার্চ) আগারগাঁওয়ের এনবিআর আয়োজিত ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
আবদুর রহমান খান বলেন, ১৫ লাখ অনলাইন রিটার্নের মধ্যে ১০ লাখই সাড়ে ৩ লাখ টাকার নিচে। এর মানে, আমরা সঠিকভাবে করদাতাদের শনাক্ত করতে পারছি না।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ, ১০ লাখ করদাতার আয়কর বিবরণীতে উল্লিখিত বার্ষিক আয়ের বিপরীতে কোনো কর প্রদান করা হয়নি। এ নিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে, যারা কর প্রদান করছেন না, তাদের প্রকৃতপক্ষে করযোগ্য আয় নেই কি না। আমাদের কর ফাঁকি শনাক্ত করার দিকে আরও মনোযোগী হতে হবে।
এ সময় ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা মূল্যস্ফীতির ভিত্তিতে ব্যক্তিগত করদাতাদের কর ছাড়ের সীমা সাড়ে তিন লাখ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকার করার প্রস্তাব দেন।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সাড়ে তিন লাখ থেকে ৪ লাখ বা ৫ লাখ টাকা করার বিষয়টি যৌক্তিক মনে করি। তবে সমস্যা হলো, বর্তমানে ডিজিটাল রিটার্নের মাধ্যমে সকল তথ্য আমাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৫ লাখ ১৫ হাজার রিটার্ন জমা পড়েছে। প্রতিদিন ২-৩ হাজার রিটার্ন জমা পড়ছে এবং অনলাইন রিটার্ন এখনও চালু রয়েছে। অনেকেই রিভাইজড রিটার্নও জমা দিতে পারছেন, এটি একটি বড় সুবিধা।
শূন্য আয়কর বিবরণী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৫ লাখ রিটার্নের মধ্যে ১০ লাখ রিটার্নই সাড়ে ৩ লাখ টাকার নিচে জমা পড়েছে, যার মানে তারা এক টাকাও ট্যাক্স দেয়নি। পেপার রিটার্নের ক্ষেত্রেও চিত্র প্রায় একই। মফস্বল এলাকাতেও একই অবস্থা। যদি আমরা শূন্য রিটার্নের সীমা বাড়িয়ে চার লাখ করি, তাহলে শূন্য রিটার্নের সংখ্যা আরও এক লাখ বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, কোয়ালিটি ট্যাক্সপেয়ারদের সংখ্যা খুবই কম। যদি আমরা সিলিং বাড়িয়ে দেই, তাহলে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করব, কিন্তু এটা বলছি না যে, বাড়াবো না। এটা নিশ্চিত, যে বড় গ্রুপটি এখন ন্যূনতম কর প্রদান করে, তারা শূন্য করের আওতায় চলে যাবে, যা একটি সমস্যা।
ইআরএফের প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, বাজেটে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্রশ্রেণির উপর করের বোঝা কমানোর জন্য কর ফেরতের ব্যবস্থা করা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ওপর উপকরণের কর হার ৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখা, বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ড করমুক্ত করা, ব্যক্তিশ্রেণির কর হার ৩০-৩৫ শতাংশ করা, ভ্যাটের হার ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা, প্রত্যক্ষ করের দিকে জোর দেওয়া এবং বাজার মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে কর আদায় বৃদ্ধি করা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: