রবিবার, ২০শে জুলাই ২০২৫, ৫ই শ্রাবণ ১৪৩২


রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক দায় পরিশোধ করল সরকার


প্রকাশিত:
২০ জুলাই ২০২৫ ১৩:৩৮

আপডেট:
২০ জুলাই ২০২৫ ১৯:৫৪

ছবি সংগৃহীত

বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ বাড়ায় সরকারি খাতে রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক দায় পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৫৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার পরিশোধ হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে শুধু সরকারি ঋণই পরিশোধ হয়েছে ৪৪৪ কোটি ২৫ লাখ ডলারের। পাশাপাশি ভারতের বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে বিদ্যুৎ কেনার দায় হিসেবে আদানি গ্রুপকে ১২৬ কোটি ২০ লাখ ডলার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক দিয়েছে ১০১ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং সোনালী ব্যাংক ২৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে। যদিও এ দুই ব্যাংকের নিজস্ব বৈদেশিক মুদ্রা থেকে এসব অর্থ দেওয়া হয়নি, বরং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ডলার জোগাড় করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থ পাচার কমে যাওয়ায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় এসেছে ৩ হাজার ৩৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ শতাংশ।

পরিস্থিতির উন্নয়নের আরেকটি দিক হলো, মেয়াদোত্তীর্ণ আমদানি দায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় এ দায় ছিল ৪৪ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, যা জুন শেষে কমে মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ ডলারে নেমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক সতর্কবার্তা ও নির্দেশনার পর বকেয়া পরিশোধে অগ্রগতি এসেছে। বিশেষ করে গত ২০ এপ্রিলের এক সার্কুলারে গ্রাহকের সম্মতিতে ক্রটিপূর্ণ বিল পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়।

এদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। রেকর্ড দায় পরিশোধের পরও জুন শেষে দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত ২৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থ পাচার ঠেকাতে জোর তদারকির কারণে ডলারের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। টাকা এখন অনেকটাই শক্তিশালী। রিজার্ভও বাড়ছে।”

তবে একটি বড় দায় এখনো অনিষ্পন্ন রয়েছে। রাশিয়ার সহায়তায় নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অর্থ পরিশোধে জটিলতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে। এখন পর্যন্ত এই বাবদ সোনালী ব্যাংকে খোলা ‘স্ক্রো অ্যাকাউন্টে’ জমা রাখা হয়েছে ১০৩ কোটি ১৯ লাখ ডলার, যার মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই জমা হয়েছে ২২ কোটি ২৯ লাখ ডলার। গত বছর চীনের মাধ্যমে পরিশোধের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।

সবশেষে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত হস্তক্ষেপের ফলে আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম একপর্যায়ে কমে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা হলেও বাজারে ভারসাম্য ফেরাতে গত সপ্তাহে ৪৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে আবার ডলারের দর উঠেছে ১২১ টাকার ওপরে।

ডিএম /সীমা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top