বাংলাদেশ আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে বাড়ছে চালের দাম
প্রকাশিত:
৩০ জুলাই ২০২৫ ১৭:৫৩
আপডেট:
৩১ জুলাই ২০২৫ ১৬:৫৮

চলতি বছর অতি বৃষ্টির আশঙ্কায় আগেভাগেই চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ৭ আগস্ট প্রায় ৯ লাখ টন চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের বাজারে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় নন-বাসমতী চালের দাম বেড়ে গেছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকেরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের আমদানি পরিকল্পনার খবরে দেশটির বাজারে স্বর্ণা, মিনিকেট ও সোনামাসুরির মতো চালের দাম গত কয়েক সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
ভারতের ভিলা গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সুরাজ আগরওয়াল ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ইতিমধ্যেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পড়তে শুরু করেছে। ভারতের বিভিন্ন প্রসেসরের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ব্যাপক ব্যবহৃত নন-বাসমতী চালের দাম বর্তমানে ৭ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৩২ রুপিতে, আর মিনিকেট ও সোনামাসুরির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ রুপিতে।
রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভি কৃষ্ণা রাও জানিয়েছেন, বাংলাদেশের আমদানির বড় একটি অংশ ভারত থেকে রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ, ভারতের উৎপাদন পরিস্থিতি ভালো এবং পরিবহন খরচও কম।
বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ অনুযায়ী, ৯ লাখ টন আমদানির মধ্যে ৪ লাখ টন আনবে সরকারি সংস্থাগুলো এবং ৫ লাখ টন আমদানি করতে পারবে বেসরকারি খাত। দরপত্র আহ্বানের পর ছয় সপ্তাহের মধ্যে রপ্তানিকারকেরা চাল সরবরাহ করতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও বিহার থেকে সংগৃহীত মিনিকেট ও সোনামাসুরির চাল বাংলাদেশে রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
ব্যবসায়ী সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশ সাধারণত আগস্টের পর চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এবার জুলাই ও আগস্ট মাসে অতি বৃষ্টির সম্ভাবনা এবং বপন করা ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় আগাম আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৩ লাখ টন চাল আমদানি করেছে, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৯ দশমিক ৭ লাখ টন।
ভারত থেকে চলতি অর্থবছরে ৮ লাখ টন চাল আমদানি করেছে বাংলাদেশ, যা ভারতের মোট ১৪ দশমিক ১৩ মিলিয়ন টন নন-বাসমতী চাল রপ্তানির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১৬ দশমিক ২ লাখ টন, যা সে বছরের রপ্তানির ১০ শতাংশ।
চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দেশ। ২০২৫-২৬ বিপণন বছরে দেশের চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন টন।
ডিএম /সীমা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: