রবিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র ১৪৩২


যুক্তরাষ্ট্রের বাজার নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারলে শুল্কহ্রাসের আরো সম্ভাবনা রয়েছে


প্রকাশিত:
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৫৮

আপডেট:
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৪৮

ছবি : সংগৃহীত

আমরা যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারি তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের শুল্কহ্রাসের আরো সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ইউএসটিআর) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী ব্রেন্ডান লিঞ্চের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের যে আলোচনা চলমান রয়েছে তার ধারাবাহিকতায় এর আগে দুই দফা যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনা করেছি, আজকে আবার বাংলাদেশে আলোচনা করলাম। আমরা বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে শুল্ককে নিন্মমুখি বিবেচনার জন্য আমরা তাদের অনুরোধ জানিয়েছি। একইসঙ্গে তারা আশ্বাস দিয়েছে যে আমরা বাণিজ্য ঘাটতির নিন্মমুখির উদ্দেশ্য সমাধান করতে পারলে আশা করতে পারি আমাদের শুল্ক হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে চুক্তি করার কথা ছিলো সেটা কবে হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এই মুহূর্তে চুক্তি হচ্ছে না। তবে সেই চুক্তির জন্যই এই আলোচনা করা হচ্ছে। আমরা যে প্রেক্ষাপটে যে পণ্য সম্ভার নিয়ে আলোচনা করেছি। সেই পণ্যগুলোর অগ্রগতির পর্যালোচনা করেছি। আপনারা জানেন যে আমাদের কতগুলো ক্রয়ের প্রতিশ্রুতি ছিলো। যেমন বিমান কেনাসহ অন্যান্য পণ্য কেনার যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে সেগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের অগ্রগতির পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে আমদানি বাড়ছে এবং যে পর্যন্ত সন্তোষজনক পর্যায়ে না পৌঁছাবে সে পর্যন্ত শুল্ক হ্রাস হবে না। এতে করে উভয় দেশেরই সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েকটি পণ্যের উপর ভিত্তি করে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চেষ্টা করছি। এরমধ্যে কৃষিপণ্য ও জ্বালানি পণ্য রয়েছে। এসব পণ্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে আমরা কিনতে পারছি। এছাড়া এর বাইরেও আমাদের বিমান কেনা, এলএনজির বিষয় রয়েছে। সুতরাং আমাদের অগ্রগতির পর্যালোচনায় আমাদের অগ্রগতি সন্তোষজনক বলে মনে করছি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল কি বলে গেল, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সন্তোষজনক অগ্রগতি হচ্ছে আমাদের। ফলে আমরা আশা করছি যুক্তরাষ্ট্রের তুলার উপরে নির্ভর করে পোশাক শিল্পের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছি। আজকের আলোচনার অন্যতম লক্ষ্য ছিলো সেক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি আছে। আমাদের যে তুলা উৎপাদন হয় তা আমাদের মোট চাহিদার দুই শতাংশ। আমাদের ৯৮ শতাংশ তুলা আমদানি করতে হয়। তাই আমাদের আগ্রহ ছিলো এটার উপর ভিত্তি করে শুল্ক হ্রাস করা।

তিনি বলেন, আমরা যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করতে পারি তাহলে আমাদের শুল্কহ্রাসের আরো সম্ভাবনা রয়েছে।

বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আমদানিকারকদের কোনো সুবিধা দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেসরকারি পর্যায়ে কোনো পণ্যের দাম বেশি হলে সেটা আমদানি করতে সরকার বাধ্য করতে পারবে না। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি পণ্য তুলনামুলকভাবে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। আমার জানামতে বেসরকারি খাতে গত দুই মাসে সয়াবিন বীজ আমদানি করেছে। কারণ তারা সেখানে উপযুক্ত মূল্যে পাচ্ছে। সেখানে যে তেলবীজটা পাওয়া যায় সেটা অত্যন্ত উন্নতমানের ও তেল বেশি হয়। ফলে আপাতত দৃষ্টিতে দাম বেশি পরলেও প্রকৃতপক্ষে সস্তাই পড়বে।

বাণিজ্য ঘটতি ছাড়া অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন কি? উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, আজকে বাণিজ্য ঘাটতি ছাড়া অন্যকোনো ইস্যু ছিল না। লেবার ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনা ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না লেবার ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

কি অগ্রগতি হয়েছে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, আপনারা জানেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের ছয় বিলিয়ন ডলারের মতো বাণিজ্য ঘাটতি আছে। এজন্য তাদের থেকে সয়াবিন আমদানি করছি। সেটাও আমাদের প্রতিশ্রুতির একটা অংশ আমরা সেসব বিষয় তাদের জানিয়েছি। গত অর্থবছরে আমরা তাদের থেকে তুলা কিনেছি ৬ মিলিয়ন ডলার আর এবছর দুই মাসেই ২৭৩ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। এভাবেই আমাদের আমদানি বেড়েছে।

আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে যে চুক্তিটা হবে সেখানে শুল্ক কমানোর বিষয় থাকবে কি না, জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, সেটা নির্ভর করবে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসের ওপর।

বোয়িং আমদানির কোনো পরিকল্পনা কি দিয়েছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। আমরা যে দুই কোম্পানি থেকে বোয়িং আনবো তারা ২০৩২ সালের আগে দিতে পারবে না। প্রতিবছর তারা নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি বোয়িং উৎপাদন করতে পারবে না। আমি আজকে অর্ডার দিলাম সামনের বছর পেয়ে যাবো এরকম কোনো বিষয় না।

বোয়িং দিয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব না, বিষয়টা এমন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বোয়িং দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব। আমরা আশা করছি যে তাৎপর্যপূর্ণভাবে আমরা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারি, তাহলে আরো বেশি অগ্রাধিকার শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ করতে পারি তাহলে আমাদের আমদানি ও রপ্তানি উভয় বাড়বে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top