জরায়ু ফাইব্রয়েড রোগীদের কী খাওয়া উচিত
প্রকাশিত:
১৪ জুন ২০২৫ ১৩:২৭
আপডেট:
১৫ জুন ২০২৫ ০৩:০৬

জরায়ু ফাইব্রয়েড যা জরায়ু লিওমায়োমা নামেও পরিচিত। ফাইব্রয়েড মসৃণ পেশি কোষ ও তন্তুযুক্ত সংযোগকারী টিস্যু দিয়ে গঠিত। অনুমান করা হয়, ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নারীর জীবনের কোনো না কোনো সময়ে জরায়ু ফাইব্রয়েড তৈরি হবে, তবে সবার লক্ষণ দেখা যাবে না বা চিকিৎসার প্রয়োজন হবে না। জেনে নেওয়া যাক জরায়ু ফাইব্রয়েড রোগীর খাদ্যাভাস।
সবুজ শাকসবজি এবং ফল
এ রোগীদের খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি ও ফল রাখা উচিত। গবেষণা অনুসারে, সবুজ শাকসবজি ও ফল ফাইবার সমৃদ্ধ এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে ফাইব্রয়েডের বিকাশরোধ করতে সাহায্য করে। ফাইবারসমৃদ্ধ উপাদান ওজন কমাতে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতেও সাহায্য করে।
এছাড়া এগুলো জরায়ু ফাইব্রয়েড বৃদ্ধিরোধ করতে ও ধীর করতে সাহায্য করে। সবুজ শাকসবজি ও তাজা ফল পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ, ভিটামিন, খনিজ পদার্থসমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক অক্সিজেনসমৃদ্ধ যা স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া সবুজ শাকসবজি, এবং ফলমূল কম ক্যালরিযুক্ত খাবার যা মহিলাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। জরায়ু ফাইব্রয়েড রোগীরা পালং শাক, গাজর, মুলা, টমেটো, বেল মরিচ ব্রুকলি খেতে পারেন।
সাদা মাংস খান
প্রতিদিনের খাবারে গরুর মাংস, মহিষের মাংস ইত্যাদি লাল মাংসের পরিবর্তে সাদা মাংস খান। কারণ লাল মাংস ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়াতে পারে এবং ফাইব্রয়েড বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে পারে; যার কারণে পেট ব্যথা, জরায়ুতে রক্তপাত এবং সংকোচন ঘটে যা ফাইব্রয়েড আরও খারাপ করে তোলে।
মাছ
প্রতিদিনের খাবারে মাছ খেলে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও মাছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা ফাইব্রয়েড রোগীদের উদ্দীপনা কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া। সামুদ্রিক ও চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যকর। এগুলো টিস্যুর ফোলাভাব কমাতে পারে।
শস্যদানা
অপ্রক্রিয়াজাত শস্যের গ্লাইসেমিক সূচক কম থাকে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ হয়, যা ফাইব্রয়েড প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গোটা শস্য ফাইবারসমৃদ্ধ যা সঠিকভাবে খেলে শরীর থেকে বিষমুক্ত পদার্থ এবং অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন দূর করতে সাহায্য করে। এটি ফাইব্রয়েড প্রতিরোধে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এ জন্য সাদা স্টার্চ জাতীয় খাবার যেমন সাদা আটা, সাদা চাল, সাদা চিনির পরিবর্তে বাদামি স্টার্চ জাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত।
সবুজ বা গ্রিন টি
গ্রিন টিতে এপিগ্যালোকাটেচিন গ্যালেট থাকে যা এর শক্তিশালী প্রদাহ বিরোধী প্রভাবের কারণে জরায়ু ফাইব্রয়েডের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। গ্রিন টিতে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। গ্রিন টি জরায়ু ফাইব্রয়েডের কারণে যে ভারী রক্তপাত হয় তা উন্নত করতে
আপেল সাইডার ভিনেগার
শরীরকে ডিটক্সিফাইং করার পাশাপাশি আপেল সাইডার ভিনেগার জরায়ুকে সুস্থ রাখে। অনেকেই সরাসরি আপেল সাইডার ভিনেগার খেতে পারে না। এ জন্য যে কোন সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
লেখক: পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: