মঙ্গলবার, ২৮শে অক্টোবর ২০২৫, ১২ই কার্তিক ১৪৩২


স্তন-ত্বকের ক্যানসার নির্মূলে নতুন ওষুধ আবিষ্কারের দাবি


প্রকাশিত:
২৯ আগস্ট ২০২৫ ১২:৪৫

আপডেট:
২৮ অক্টোবর ২০২৫ ০২:৪৯

ছবি সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা স্তন-ত্বকের ক্যানসার নির্মূলে একটি নতুন ওষুধের উদ্ভাবন করেছেন, যা এই মারাত্মক রোগের চিকিৎসায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ‘ইমিউনোথেরাপি’ এই নতুন ওষুধটি প্রচলিত কেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশনের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরী হতে পারে, যা রোগীদের জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে। ক্যান্সারের চিকিৎসায় যুগান্তকারী এই আবিষ্কার শুধু রোগের বিস্তার রোধ করবে না, বরং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে। এটি চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

নতুন ওষুধ ‘ইমিউনোথেরাপি’ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সরাসরি টিউমারের ওপর প্রয়োগ করা যাবে। নির্দিষ্ট ডোজে দিলে তা ক্যানসার সৃষ্টিকারী টিউমার কোষ ধ্বংস করবে বলে দাবি গবেষকদের।

আমেরিকার রকফেলার ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা বলছেন, স্তন ক্যানসার, ত্বক ও প্রস্টেট ক্যানসারের রোগীদের ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১২ জন ক্যানসার রোগীর শরীরে ওষুধটি প্রয়োগ করেছেন তারা। তাদের মধ্যে দুইজনের ক্যানসার সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

গবেষকেরা ক্যানসার সারাতে যে চিকিৎসার কথা বলছেন, তা আসলে এক প্রকার ইমিউনোথেরাপি। যে ওষুধটি তৈরি হয়েছে তার নাম সিডি৪০ ২১৪১-ভি১১। ওষুধটি এক ধরনের মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি, যা টিউমার কোষ ধ্বংস করতে সক্ষম বলে দাবি করা হয়েছে। ‘ক্যানসার সেল’ নামক মেডিকেল জার্নালে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে।

সেখানে গবেষক হুয়ান ওসোরিও লিখেছেন, বছর কয়েক আগে থেকে সিডি৪০ ওষুধটি নিয়ে গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছিল। তবে ওষুধটি মানুষের শরীরে প্রয়োগ করে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। এরপর ওষুধটির ফর্মুলায় কিছু বদল এনে নতুনভাবে সেটি তৈরি করা হয়েছে। সিডি৪০ অ্যান্টিবডির আরও উন্নত রূপ হল ২১৪১-ভি১১। এই ওষুধটি স্তন ক্যানসার, ত্বকের ক্যানসার বা মেলানোমা, প্রস্টেট ক্যানসার, ব্লাডার ক্যানসার সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদী গবেষকেরা।

ক্যানসারের চিকিৎসা মানেই আতঙ্ক। রেডিয়োথেরাপি বা কেমোথেরাপিতে রোগীর যন্ত্রণা বাড়ে। ক্যানসার কোষগুলোর পাশাপাশি সুস্থ কোষগুলোরও ক্ষতি হতে থাকে, ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা একেবারে কমে যায়। ইমিউনোথেরাপি এ ধরনের রোগীকে সাহায্য করে। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগীর শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বহু গুণে বাড়িয়ে তুলে ক্যানসার কোষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়, যাতে প্রতিরোধী কোষগুলো আবার জেগে উঠে লড়াই করতে পারে।

এর ফলে সম্পূর্ণভাবে ক্যানসারের কোষগুলোকে নির্মূল করা সম্ভব হয়। এছাড়া শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ শক্তিও বৃদ্ধি পায়। নতুন ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এর দ্বারা ৬ জন ক্যানসার রোগীর টিউমার কোষের বৃদ্ধি বন্ধ হয়েছে এবং দুইজন ক্যানসারমুক্ত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। আরও কিছু মানুষের ওপর পরীক্ষা করেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top