বুধবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


প্রবল বর্ষণে বন্যা-ভূমিধস

দ. কোরিয়ায় ডুবে যাওয়া সুড়ঙ্গ থেকে ৭ মরদেহ উদ্ধার, নিহত বেড়ে ৩৩


প্রকাশিত:
১৬ জুলাই ২০২৩ ১৮:১৭

আপডেট:
২৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৩৯

 ফাইল ছবি

কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণের জেরে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে পূর্ব এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ জনে। এর মধ্যে বন্যায় প্লাবিত একটি সুড়ঙ্গে আটকে পড়া গাড়ি থেকে ৭টি মরদেহ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকারীরা।

এছাড়া সুড়ঙ্গে নিমজ্জিত আটকে পড়া গাড়িগুলোর কাছে পৌঁছাতে উদ্ধারকারীরা এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার (১৬ জুলাই) পৃথক দুই প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্ধারকারীরা বন্যায় প্লাবিত একটি সুড়ঙ্গে আটকে পড়া বেশ কয়েকটি গাড়ির কাছে পৌঁছাতে কাজ করছেন। ইতোমধ্যে সেখান থেকে অন্তত সাতটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। মুষলধারে বৃষ্টির কারণে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির বেশিরভাগ অংশে বন্যা, ভূমিধস দেখা দেওয়ার পর বিদ্যুৎ বিভ্রাটও দেখা দিয়েছে।

এছাড়া প্রবল বর্ষণের জেরে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে দক্ষিণ কোরিয়ায় কমপক্ষে আরও ২৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি এখনও দশজন নিখোঁজ রয়েছেন।

বিবিসি বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া ৬৮৫ মিটার দীর্ঘ টানেলে কতজন লোক এখনও আটকা পড়ে আছেন তা স্পষ্ট নয়। তবে সেখানে ১৫টি যানবাহন ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কর্মকর্তারা বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় নর্থ চুংচেং প্রদেশের চেওংজু শহরের কাছে ওসোংয়ে অবস্থিত এই টানেলটি ভারী বর্ষণের পর সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ভেসে যিায়। মূলত ভারী বর্ষণের জেরে পার্শ্ববর্তী নদীর তীর ছাপিয়ে পানি ছড়িয়ে পড়লে টানেলটি নিমজ্জিত হয় এবং এই ঘটনাটি এতোটাই দ্রুততার সঙ্গে ঘটে যে গাড়ির চালক এবং যাত্রীরা পালিয়ে যাওয়ার মতো সময় পাননি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, রোববার সকালে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া একটি বাসের ভেতর থেকে ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে শনিবার সেখানে অন্য একটি মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায় এবং নয়জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সর্বশেষ এই প্রাণহানির ঘটনার ফলে বন্যা ও এ সম্পর্কিত নানা ঘটনায় সামগ্রিক নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে কমপক্ষে ৩৩ জনে। অবশ্য অন্যান্য প্রাণহানির বেশিরভাগই হয়েছে পার্বত্য নর্থ গিয়ংসাং অঞ্চলে। সেই অঞ্চলে ভূমিধসের কারণে সকল বাড়িঘর ভেসে গেছে।

পৃথক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, আকস্মিক বন্যায় আন্ডারপাসে একটি বাসসহ প্রায় ১৫টি যানবাহন ডুবে যেতে পারে বলে পশ্চিম চেওংজু ফায়ার স্টেশনের প্রধান সিও জিওং-ইল বলেছেন।

সিও সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা তল্লাশি অভিযানের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি কারণ সেখানে সম্ভবত আরও লোক আটকে রয়েছেন। আমরা আজই এই উদ্ধারকাজ গুটিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, নিমজ্জিত টানেলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাতজনে।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় বলেছে, রোববার সকাল ১১টা পর্যন্ত ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ভারী বর্ষণের জেরে সারা দেশে সৃষ্ট ভূমিধস এবং বন্যার কারণে ৭ হাজার ৮৬৬ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মন্ত্রণালয়ের তথ্যে প্লাবিত ওই সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কারণ ঠিক কতজন মানুষ সেখানে পানির নিচে আটকা পড়েছেন তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হয়নি।

এদিকে শনিবার দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে প্রায় ৩০০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানা গেছে। কোরিয়ান মেটিওরোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, দেশটি বছরে সাধারণত ১০০০ মিমি থেকে ১৮০০ মিমি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। যদিও এই বৃষ্টির বেশিরভাগই হয়ে থাকে গ্রীষ্মের মাসগুলোতে।

শনিবার কোরিয়ার আবহাওয়া প্রশাসনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রোববার কোরীয় উপদ্বীপে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কোরিয়া রেলরোড করপোরেশন বলেছে, তারা দেশজুড়ে সব ধরনের ধীরগতির ট্রেন ও কিছু বুলেট ট্রেনের যাত্রী পরিবহন স্থগিত করেছে। অন্যান্য বুলেট ট্রেনের যাত্রীসেবাও বিলম্বিত হতে পারে।

মূলত ভূমিধস, রেললাইনে বন্যার পানি ও পাথর সরে যাওয়ায় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। আর এর জেরেই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top