দাবি ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার
বাংলাদেশি মেয়েদের চাকরির প্রলোভনে ভারতে পাচার, হতো পতিতাবৃত্তি
প্রকাশিত:
১৪ মার্চ ২০২৫ ১১:১৭
আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ১৯:০২

ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে মেয়েদের পাচার করা হতো ভারতে। পাচারের জন্য এজেন্টদের মাথাপিছু দেওয়া হতো চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হায়দরাবাদে পতিতাবৃত্তি সংক্রান্ত এক মামলার তদন্তে এমনটাই জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
ভারতের কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার দাবি, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে মেয়েদের ভারতে পাচারের এই কাজে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার কিছু দালালকে ব্যবহার করতেন হায়দরাবাদের এই চক্রের পরিচালনাকারীরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ইডি জানায়, এই মামলার তদন্তে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরে এই মামলা সংক্রান্ত একটি বিবৃতিও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই সংস্থাটি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, হায়দরাবাদ এবং সংলগ্ন এলাকায় হানা দিয়ে মানবপাচার চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। অভিযোগ সেখানে পতিতাবৃত্তি চলত। বিবৃতিতে ইডি জানিয়েছে, হায়দরাবাদে ওই চক্রটি মূলত বাংলাদেশিরাই চালাতেন বলে পুলিশি তদন্তে উঠে আসে। এই নিয়ে তেলঙ্গানা পুলিশ প্রথমে দুটি পৃথক এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। সেই সূত্র ধরে আর্থিক অনিয়মের মামলায় তদন্ত শুরু করে ইডিও। পরে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-ও এই মামলার তদন্তে নামে।
বিবৃতিতে ইডি জানিয়েছে, এনআইএ মামলার তদন্ত শুরুর পরে অনেকেই গ্রেপ্তার হন এবং ধৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশি। ভুয়া নথিতে তারা ভারতে বাস করছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হওয়ার পরেও বাংলাদেশ থেকে মেয়েদের ভারতে পাচার করার এই চক্রটি সক্রিয় ছিল বলে বিবৃতিতে দাবি করে ইডি।
ইডি জানিয়েছে, পাচারের জন্য মূলত পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত ব্যবহার করত এই চক্রটি। জামাকাপড়় সেলাইয়ের দোকান, বিউটি পার্লার, ইস্পাত কারখানা, পরিচারিকার কাজ-সহ বিভিন্ন জায়গায় বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি মেয়েদের নিয়ে যাওয়া হতো হায়দরাবাদে। পরে জোর করে পতিতাবৃত্ততে নামতে বাধ্য করা হতো।
এই মামলায় একটি এফআইআরে ইতোমধ্যে এনআইএ বিশেষ আদালত ছয় আসামির যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেছে।
ইডির তদন্তে উঠে আসে, এই চক্রের সঙ্গে বেশ কিছু এজেন্টও জড়িত ছিলেন। আর্থিক লেনদেনের জন্য তারা বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট এবং ‘অনলাইন ওয়ালেট’ ব্যবহার করতেন।
বাংলাদেশি মেয়েদের পাচারের জন্য ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সক্রিয় এই দালালদের মাথাপিছু ৪-৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হতো। ওই টাকা পাচারের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্নজনের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া হতো বলে দাবি তরে ইডি।
বিবৃতিতে তদন্তকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, কখনও কখনও নগদেও লেনদেন করা হতো। টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে তদন্তকারীদের বা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ এড়াতে, ছোট ছোট অংকে টাকা ভাগ করে তা পাঠানো হতো।
এমনকি টাকা পাঠানো হতো বাংলাদেশেও। তদন্তে ইডির দাবি, কখনও কখনও বাংলাদেশের মোবাইল ব্যংকিং পরিষেবা ‘বিকাশ’ও ব্যবহার করত এই চক্রটি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: