মঙ্গলবার, ২৫শে মার্চ ২০২৫, ১১ই চৈত্র ১৪৩১


ট্রাম্পের হুমকির মুখে আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কানাডা


প্রকাশিত:
২৩ মার্চ ২০২৫ ১৩:৩৯

আপডেট:
২৩ মার্চ ২০২৫ ১৩:৫৮

ছবি সংগৃহীত

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফিরে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর সঙ্গে বিশ্বে যেন আবারও ফিরে এসেছে বাণিজ্যযুদ্ধ। কানাডার সব পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।

আর বাণিজ্য নিয়ে এই হুমকির মধ্যে আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কানাডা। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী আজই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারেন। রোববার (২৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি রোববার আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং সংযুক্তির হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরও শক্তিশালী ম্যান্ডেটের আশা করছেন তিনি।

চলতি মাসের মাঝামাঝিতে কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মার্ক কার্নি। এর আগে গত ১০ মার্চ তিনি লিবারেল পার্টির দলীয় প্রধান নির্বাচিত হন। আর সংবিধান অনুযায়ী দলীয় প্রধান হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণের দায়িত্ব পান। এরপর ১৪ মার্চ দেশটিতে জাস্টিন ট্রুডো অধ্যায়ের অবসান ঘটে এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী হন মার্ক কার্নি।

মূলত মার্ক কার্নি এমন সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী-নির্বাচিত হওয়ার পরই কার্নি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নিয়ে কথা বলেন।

সেসময় কানাডিয়ান পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে ‘নিজেদের জীবনের সবচেয়ে বড় সংকট’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন কার্নি। মূলত কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান মার্ক কার্নি কখনও বৃহত্তর কানাডিয়ান ভোটারদের মুখোমুখি হননি।

যদি প্রত্যাশা অনুযায়ী অক্টোবরের বেশ কয়েক মাস আগেই কার্নি যদি সংসদ নির্বাচন আয়োজনের কথা ঘোষণা করেন, তাহলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে।

সরকারি একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, তিনি রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে কানাডার ৪ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার উদ্দেশ্যে এক ভাষণে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মার্ক কার্নি

বার্তাসংস্থাটি বলছে, এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা লিবারেল সরকার গভীর অজনপ্রিয়তার মধ্যে পড়েছিল। তবে ট্রাম্পের হুমকির কারণে কার্নি কানাডিয়ানদের মধ্যে জেগে ওঠা দেশপ্রেমের ফলে নতুন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের আশা করছেন।

ট্রাম্প তার উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর সার্বভৌমত্ব এবং সীমান্তকে বারবার কৃত্রিম বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এবং ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘গভর্নর ট্রুডো’ হিসেবে ডেকেছিলেন তিনি।

তবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্পের এই মন্তব্যের জবাব কিছুটা ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন মার্ক কার্নি। তিনি বলেছিলেন, “আমেরিকা কানাডা নয়। এবং কানাডা কখনো, কোনোদিন কোনোভাবে আমেরিকার অংশ হবে না।”

এমন অবস্থায় আগাম নির্বাচনের ঘোষণার গুঞ্জনের মধ্যে কার্নি গত বৃহস্পতিবার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এডমন্টনে এক বক্তৃতায় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই সংকটের সময়ে সরকারের একটি শক্তিশালী এবং স্পষ্ট ম্যান্ডেট প্রয়োজন।

সাধারণত কানাডিয়ান জীবনযাত্রার ব্যয় এবং অভিবাসনের মতো বিষয়গুলো কানাডার নির্বাচনে প্রাধান্য পেয়ে থাকে। তবে এই বছর একটি মূল বিষয় তালিকার শীর্ষে রয়েছে তা হলো ট্রাম্পকে কে সবচেয়ে ভালোভাবে সামলাতে পারবে।

প্রসঙ্গত, কানাডা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্র এবং ঐতিহাসিকভাবে ওয়াশিংটনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ অংশীদার। তবে প্রতিবেশীর প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রকাশ্য শত্রুতাপূর্ণ নীতি কানাডিয়ান রাজনৈতিক দৃশ্যপট অনেকটাই উল্টে দিয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top