নিয়ন্ত্রণরেখা উত্তপ্ত, ভারত–পাকিস্তান সীমান্তে ফের গোলাগুলি
প্রকাশিত:
২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১২:১২
আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫৯

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বৈসরণে ২৬ জন পর্যটক হত্যাকাণ্ডের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। এ ঘটনার জেরে কাশ্মীর সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) জুড়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। গত দুই রাতে দুবার দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো দাবি করছে, পাকিস্তানি সেনারা বিনা প্ররোচনায় ভারতীয় সীমান্ত চৌকিগুলো লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীর ও লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর একাধিক পাকিস্তানি পোস্ট থেকে এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনারাও পাল্টা জবাব দিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘২০২৫ সালের ২৫ এপ্রিল দিবাগত রাতে কাশ্মীরজুড়ে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর একাধিক পাকিস্তানি সেনাপোস্ট থেকে বিনা কারণে ছোট অস্ত্রের ফায়ারিং করা হয়েছে। ভারতীয় সেনারা ছোট অস্ত্র দিয়ে এর যথাযথ জবাব দিয়েছে। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।’
গত বৃহস্পতিবার রাতেও একই ধরনের বিচ্ছিন্ন গুলির ঘটনা ঘটেছিল।
এটিকে নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘাতে না জড়ানোর চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে ভারত। যেখানে পেহেলগামের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমে তীব্রতর হচ্ছে।
ভারত কি পাকিস্তানকে ‘পানিতে মারতে’ চায়, আসলে তা সম্ভব?ভারত কি পাকিস্তানকে ‘পানিতে মারতে’ চায়, আসলে তা সম্ভব?
গত মঙ্গলবার ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ খ্যাত বৈসরণে ছুটি কাটাতে যাওয়া কমপক্ষে ২৬ জন পর্যটককে গুলি করে হত্যা করে পাঁচজন অস্ত্রধারী। দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামে একটি অজানা সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করেছে। ভারতের দাবি, এই সংগঠন পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে যুক্ত।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারত সিন্ধুর পানি চুক্তি স্থগিত করেছে। দিল্লি থেকে কড়া বার্তা দিয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রী সি আর পাতিল হুমকি দিয়েছেন, সিন্ধুর ‘এক ফোঁটা পানিও’ পাকিস্তানে যেতে দেওয়া হবে না।
ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই কূটনৈতিক কর্মীদের প্রত্যাহার করেছে এবং একে অপরের নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য একটি সংক্ষিপ্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আন্তসীমান্ত যাতায়াত পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কম।
ইসলামাবাদও ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সমস্ত চুক্তি স্থগিত করেছে, যার মধ্যে সিমলা চুক্তিও অন্তর্ভুক্ত। ওয়াগা সীমান্ত, যা উভয় দেশের হাজার হাজার পর্যটকদের আকর্ষণ করে এবং জনপ্রিয় সীমান্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে ভারতের সরকারি ও বেসরকারি এয়ারলাইনগুলো।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: